উদ্যোক্তা নাসরিন আক্তার ইমুর এগিয়ে চলার গল্প ! উদ্যোক্তাদের গল্প সফল উদ্যোক্তার গল্প by Jannatun Naime - April 4, 2022April 4, 20220 Spread the love উদ্যোক্তা নাসরিন আক্তার ইমুর এগিয়ে চলার গল্প ! একজন নারী উদ্যোক্তা নাসরিন আক্তার ইমু। যিনি এগিয়ে চলছেন তার কাস্টমাইজ বোরকা ও খাবারের বিভিন্ন আইটেম নিয়ে। পাশাপাশি তিনি কাজ করছেন থ্রী-পিস ও শাড়ী নিয়ে। এই পর্বে আমরা জানবো তার এগিয়ে চলার গল্প। উদ্যোক্তা নাসরিন আক্তার ইমুঃ আমি নাসরিন আক্তার ইমু। আমার জন্ম এবং বেড়ে উঠা ইলিশ এর বাড়ি চাঁদপুর এর হাজীগঞ্জ থানায়। আমি রসায়ন বিভাগে অনার্স কমপ্লিট করি চাঁদপুর সরকারি কলেজ থেকে। বর্তমানে মাস্টার্সে অধ্যয়নরত রয়েছি চাঁদপুর সরকারি কলেজে। আমি মা-বাবার ছোট মেয়ে । আমার উদ্যোক্তা জীবন শুরু করার কারণঃ আমি সব সময় ই চেয়েছিলাম উদ্যোক্তা হতে। আমার চাকরির প্রতি তেমন কোন মোহ নেই। চাকরি করার কোনো ইচ্ছেও নেই। আমার স্বপ্ন ছিলো আমি একজন উদ্যোক্তা হবো। আমার কাজ করার ইচ্ছে শক্তি খুব বেশি তবে তা চাকরিজনিত না। আমার ইচ্ছে একজন দক্ষ উদ্যোক্তা হয়ে উঠা। আমি চাই মানুষ আমায় এই নামে চিনুক এবং জানুক। যে আমি একজন উদ্যোক্তা। ছাএী জীবনে আমার লক্ষ্য ছিল আমি অন্যের অধীনে কাজ করবো না,আমার নিজের উদ্যোগে কিছু করবো। যাতে সবকিছু আমারই থাকে। আমার উদ্যোক্তা জীবনঃ আমি আগে একজন রিসেলার ছিলাম। অন্যের পণ্য সেল করতাম। তারপর অনার্স শেষ করলাম। তখন কোভিড-১৯ চলে এলো। তারপর ভাবলাম আর কত অন্যের পণ্য নিয়ে কাজ করবো! সেই তো অন্যের অধীনে কাজ করা হয়ে গেলো। তাই গত ২০২০- এর ৭ জুলাই থেকে নিজে কিছু করার সিদ্ধান্ত নিলাম। আমার প্রথম উদ্যোগের কাজ শুরু করেছি খাদি পাঞ্জাবী নিয়ে। কুমিল্লার বিখ্যাত এই খাদি কালেকশন নিয়ে আলহামদুলিল্লাহ আমি অনেক সাড়া পেয়েছি। তারপর ভাবলাম হাতে কলমে কিছু করতে হবে। তাই তার সাথে এড করলাম বোরকার প্রি-অর্ডার নেয়া। আমি বোরকা কাস্টমাইজড করি। নিজে তৈরি করি। আলহামদুলিল্লাহ তাতেও সাড়া পেয়েছি। তাই আমার উদ্যোগের নাম দিলাম Fashion Floora By Emu. বর্তমানে আমি কাজ করছি মেয়েদের হেন্ডমেইক বোরকা, থ্রী-পিস, খাদি পাঞ্জাবী নিয়ে। পাশাপাশি খাবারের আইটেম নিয়েও কাজ করছি ! পেইজের নাম – ইমুর পিঠা বাড়ী ছবিঃ থ্রি-পিস ! আমার ব্যবসায়িক জীবনঃ আমার ব্যবসায়িক জীবন টা প্রথম অবস্থায় খুব একটা ভালো ছিলোনা। অন্য লোকের মাধ্যমে খাদি পাঞ্জাবী আনিয়ে আমি লস খেয়েছি। সে সময় আমি অনেক অসুস্থ্য ছিলাম। তারপর সেই অসুস্থ্য শরীর নিয়ে সাহস করে নিজেই মাঠে নেমে পড়ি। নিজে গিয়ে পাঞ্জাবী আনতে শুরু করি। খুঁজে খুঁজে কুমিল্লার বিখ্যাত খাদি কালেকশন বড় বড় পাইকারি বাজার থেকে নিয়ে আসি। বোরকার জন্য অরিজিনাল কাপড় ঢাকা থেকে নিজে গিয়ে নিয়ে আসা শুরু করলাম। তাও আবার একা একা। এর আগে কখনো সাহস করে নিজে একা একা বাজারে যাইনি। সেই মেয়ে আজ বাংলাদেশের বড় বড় বাজারগুলো চিনে গেছে। আমার সিগনেচার পণ্য বোরকা। আমি একইসাথে আমার উদ্যোগ আর ব্যবসা পরিচালনা করছি। আলহামদুলিল্লাহ খুব সুন্দর করে গুছিয়ে করছি। উদ্যোগের পন্যঃ বর্তমানে আমার উদ্যোগের পণ্য হলো হেন্ডমেইক বোরকা, হিজাব, খাদি পাঞ্জাবী। সাথে নতুন সংযোজন হয়েছে থ্রী-পিস, শাড়ী ও খাবার আইটেম যেমনঃ বিভিন্ন ধরনের পিঠা, কেক, পুডিং, লাড্ডু। আমার উদ্যোগের বৈশিষ্ট্য যদি বলি তাহলে বলবো একেবারে ভিন্ন ডিজাইন, ইউনিক কিছু ডিজাইন নিয়ে বোরকা তৈরি করি। নিজস্ব কারিগর দিয়ে ডিজাইনগুলো করি। তাই বাজারের বোরকার সাথে তেমন কোন মিল নেই। আর ব্যবসার মূল বৈশিষ্ট্য হচ্ছে আমি বোরকা নিজ হাতে তৈরি করি, নিজে বাচাই করে কাপড় সংগ্রহ করি। আর কুমিল্লার বিখ্যাত খাদি পাঞ্জাবী নিয়ে কাজ করছি। আমি যে সকল থ্রী-পিস আর শাড়ী নিয়ে কাজ করি সেগুলোও বাংলাদেশের বড় বড় বাজার থেকে সংগ্রহ করা হয়। আর যদি খাবার আইটেম এর কথা বলি তাহলে অনলাইনে পিঠা, কেক, লাড্ডুর গুণাবলি অনেক বেশি।আলহামদুলিল্লাহ আমি নিজ হাতে বিশুদ্ধ মানের খাবার তৈরি করে থাকি। যদিও অল্প কয়দিন হলো তারপরও ভালো মানের সামগ্রী দিয়ে তৈরি করে থাকি। আমার পন্যের বর্তমান চাহিদাঃ আলহামদুলিল্লাহ অনেক চাহিদা আমার বোরকার। মুসলিম নারীদের বোরকা সবচেয়ে প্রিয় পোশাক। আর ছেলেদের ক্ষেত্রে পাঞ্জাবী প্রিয় পোশাক। তাহলে এর চাহিদা কতটা হতে পারে বুঝে নিন। অনেকেই বাজারের দামি বোরকার সাথে আমার বোরকা মিলিয়ে দেখেছেন আমি কেমন কাপড় দেই বোরকাতে। তারপর ই চাহিদাটা বেড়ে গেলো। আলহামদুলিল্লাহ বোরকার প্রি-অর্ডার পাওয়া শুরু হওয়ায় আমার কাজের চাহিদাও বেড়ে গেলো। পাশাপাশি আমার খাদি পাঞ্জাবীগুলোও আমার জেলার বিভিন্ন দোকানে পাইকারি তে দেয়া শুরু করলাম। যারা হ্যান্ডপেইন্ট করে তারাও নেয়া শুরু করলো। অনেক চাহিদা বাড়তে থাকলো গত ২০২০ এর ৭ই জুলাই থেকে। এখন পর্যন্ত আলহামদুলিল্লাহ অনেক সাড়া পাচ্ছি। কোভিড-১৯ এর কারনে আমি উদ্যোক্তা জীবনে সফলতা বেশি দেখেছি। আমার মধ্যে ঐরকম সৎ সাহস ছিলো না কাজ করার। কিন্তু আজ আমার ভিতর সাহস এর অভাব নেই। আমার দিন দিন শুধু আগ্রহ বাড়ছে কাজ করার আলহামদুলিল্লাহ। আমার পিঠা, মিষ্টি কুমড়োর লাড্ডুর অনেক চাহিদা, আমি পিঠা উৎসবে অংশগ্রহণ করে সম্মাননা স্মারকও পেয়েছি। আলহামদুলিল্লাহ অল্প কয়দিনে অনেক সাড়া পেয়েছি। আরও চেষ্টা চালিয়ে যাবো যাতে এর চাহিদা সবসময় বাড়তে থাকে। আমার পণ্যের ভবিষ্যৎ চাহিদাঃ একজন মুসলিম হিসেবে আমি বলবো বোরকা আর পাঞ্জাবীর চাহিদা কখনো কমবে না। কারন, একজন মুসলিম নারীর পর্দার প্রথম পোশাক ই হচ্ছে বোরকা। তাই এর চাহিদা আদৌ কমবে কিনা সন্দেহ আছে। আলহামদুলিল্লাহ এর চাহিদা যুগ যুগ ধরে থাকবে। আর পাঞ্জাবীর চাহিদার কথা বললে, একজন পুরুষ মসজিদে নামাজ পড়তে গেলে অবশ্যই পাঞ্জাবী পড়ে যান। তার জন্য পাঞ্জাবী লাগবেই। আর এখন মুসলিম বলেন, হিন্দু বলেন আর যে জাতিই বলেন না কেন পাঞ্জাবী এখন সবার প্রিয় পোশাক। তাহলে এর চাহিদাও থাকবে ইনশাআল্লাহ। তাইতো বেছে বেছে ২টা জিনিস ই নিলাম যার চাহিদা কমবে না। সাথে থ্রী-পিস বা শাড়ী এগুলো বাঙ্গালী নারীর ভুষন তাই এগুলো কি কখনো বদলায়! তাই তো বলা হয় শাড়ীতেই নারী। আমার এই হিসেব মতে ভবিষ্যৎ চাহিদা আরও বেশি থাকবে। তাই আমার আগ্রহ তত বাড়ছে কাজের প্রতি ইনশাআল্লাহ। ছবিঃ কুমিল্লার খাদি পাঞ্জাবী ! অন্যদিকে পিঠা, কেক আর লাড্ডুর চাহিদা ভবিষ্যতেও থাকবে আশা করি। বাচ্চারা কুমড়ো খেতে চায় না সচরাচর কিন্তু লাড্ডু করে দিলে ইনশাআল্লাহ এক মিনিটে শেষ করে দিবে গ্যারান্টি। তাই বলবো পিঠার অনেক চাহিদা আছে। বিভিন্ন মিস্টি পিঠা, জাল পিঠা, পাকোড়া আইটেমসহ সব পিঠার ই ভবিষ্যত চাহিদা থাকবে ইনশাআল্লাহ। যাদের সাপোর্ট পেয়েছিঃ আমি মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে। তবে মা-বাবা, ভাই-বোন, আত্মীয়দের খুব আদরের ছিলাম। আমি যখন কাজ শুরু করি তখন মায়ের সাপোর্ট ছিলো কিন্তু মা অসুস্থ হওয়ার পর কাজ বন্ধ করে দেই। তারপর মা মারা যাওয়ায় আমি মাইলস্ট্রোক করে ৬ মাস কোমায় ছিলাম। যখন সুস্থ্য হই তখন সংসারের বেড়াজালে আটকে যাই। অনার্স পরীক্ষা সব মিলিয়ে আর এগোতে পারিনি। তারপর আমার খালা আমাকে সাপোর্ট করলো যাতে আমি আবারও কাজ শুরু করি। কিন্তু তিনিও আমায় মাঝ পথে ছেড়ে চলে গেলেন। তারপর আবার খাওয়া দাওয়া ছেড়ে দেই। ▶ আরও পড়ুনঃ পেইন্টিং নিয়ে উম্মে হানি অরিনের এগিয়ে চলার গল্প ! এরপর সাহস দিলো আমার বোন আর আমার হবু হাজবেন্ড( মানে যার সাথে আমার বিয়ে ঠিক হয় )। দু’জনেই আমাকে অনেক সাপোর্ট করলো। তারপর উনাদের সাহসে আমি কাজ শুরু করলাম। সেই থেকে এখনও পর্যন্ত কাজ করে যাচ্ছি। উনারা দুইজন যদি পাশে না থাকতো তাহলে হয়তো আমি কখনোই এগোতে পারতাম না। সাথে আমার পুরো পরিবারও সাপোর্ট করেছে। আলহামদুলিল্লাহ এখন আমার হাজবেন্ড, আমার বোন আর পরিবারের বাকি সবাই আমায় সাপোর্ট করে যাচ্ছে আমার উদ্যোগে, তাদের কাছে আমি চির কৃতজ্ঞ। উদ্যোক্তা জীবনে বাধা-বিপত্তিঃ আমার উদ্যোক্তা জীবনে অনেক বাধা এসেছে। সেই বাধা কাটিয়ে উঠতে আমার অনেক কষ্ট হয়েছে। আমার প্রথম উদ্যোগে আমার একটা কাজিন সিস্টার আমার পাশে ছিলো। কিন্তু কিছু দিন পর ও যখন দেখলো যে আমি এগিয়ে যাচ্ছি তখন ও আমার হাত ছেড়ে দিলো। অনেক অপমান, অনেক লাঞ্চনা নিয়ে তখন ভেঙে পড়েছিলাম। এতটাই ভেঙে পড়েছিলাম যে আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি। তখন আমার হাজবেন্ড আর আমার ভাই-বোন সবাই আমাকে অনেক বুঝানোর চেষ্টা করে। তারা বলে, জীবনে অনেক কিছুই হবে তারপরও তোমাকে উঠে দাঁড়াতে হবে। এরপর আবারও আমি উঠে দাঁড়ালাম। আবার যখন আমি একটু একটু করে এগিয়ে যাচ্ছি তখন একটা লোক বোরকা বানিয়ে দিতে বললো ৭টা, হিজাব ৬টা। আমি যথাযথ সময়ে বানিয়ে পাঠিয়ে দিলাম। কিন্তু বোরকা পাওয়ার পর তিনি আমাকে পেমেন্ট করা ছাড়াই ব্লক করে দিলো। ▶ আরও পড়ুনঃ টাঙ্গাইলের তাঁত নিয়ে সফল নারী উদ্যোক্তা প্রিয়াংকা নাগ ! আমি আবারও ভেঙে পড়লাম। কারণ, উদ্যোক্তা জীবনে আমি শুধু আমার পরিবার থেকে সাপোর্ট পেয়েছি কিন্তু টাকার কোন সাপোর্ট পাইনি। সবটা আমার জমানো সঞ্চয় ছিলো। তারপর আবারও পরিবারের ভরসায় উঠে দাঁড়ালাম। এরপর ফেইসবুকে কোন পোস্ট করলে রিচ হতো না। কেউ লাইক-কমেন্ট করতোনা। নিজের পরিচিত লোকেরাও পিছিয়ে যেতো। তখন খুব কষ্ট পেতাম। তারপরও নিজেকে মানিয়ে গুছিয়ে নিয়েছি। অনেকেই বলতে লাগলো এত দূর পড়াশুনা করে কি লাভ হলো, সেইতো কাপড় ই বিক্রি করছিস! তখন খুব কষ্ট লাগতো। কিন্তু আমার স্বপ্ন ছিলো আমি উদ্যোক্তা হবো। পরিবারের সাপোর্ট পেয়েছি ঠিকই কিন্তু আশেপাশের মানুষ অনেক কটু কথা বলেছে। তারপরও সব ধরনের বাধা পেরিয়ে আজ এই পর্যন্ত আসতে পেরেছি। আমি পড়াশোনা করে চাকরি খুঁজছিনা বরং কাপড় বিক্রি করি। আমার হবু শ্বাশুড়ীও অনেক কথা বলেছেন কিন্তু তার ছেলে আমায় সম্পূর্ন সাপোর্ট করেছেন। আমার মাঝে মাঝে মনে হতো, আমি কোন ভুল করছি না তো ! তাহলে সবাই কেন বিজনেসকে খারাপ চোখে দেখছে ? ছবিঃ পিঠা ! এগিয়ে চলার মুহুর্তঃ আমার স্বপ্ন ব্যবসা করা, উদ্যোক্তা হওয়া। কিন্তু সমাজ চায় চাকরি করি। আমার স্ট্রোক এর পর বিভিন্ন অসুখ দেখা দেয়। মাইগ্রেন এর ব্যথায় আমি কাতর হয়ে যাই। তারপর কল পাড়ে পড়ে মাথা ফেটে যায়। সেখানেও থেমে যাইনি। অসুস্থ্য শরীর নিয়েও দৌড়িয়েছি। কোভিড এর কারনে ভয় পেয়েছিলাম। কিন্তু আমার ফেইসবুক ই-কমার্স প্লাটফর্মগুলোর কারনে আমি অনেক সাড়া পেয়েছি। আমি উই প্লাটফর্মসহ আরও অনেক গ্রুপে আছি। আমার নিজের পেইজ, গ্রুপও আছে। সেই সব গ্রুপ ও ই-কমার্স সাইটগুলো আমায় অনেক সাহায্য করেছে। ▶ আরও পড়ুনঃ একজন সম্ভাবনাময়ী নারী উদ্যোক্তা বাম্পী রায় রাত জেগে ভালো মানের কন্টেন্ট, পোস্ট তৈরি করতাম। তারপর পোস্ট করতাম। পরিচিতজনরা লাইক কমেন্ট না করলেও অপরিচিতজনরা আমায় অনেক ভালোবেসেছে। গত ২বছর আগে যারা আমায় বিভিন্ন মন্তব্য করেছে তারা আজকে আমার কাছে কাজের জন্য আসে। আমাকে বাহ বা দিচ্ছে। আমার উদ্যোগ এর তারিফ করছে। যারা বলতো, আমি পড়াশোনায় ভালো না তাই ব্যবসা করছি। তারাই এখন শুনে খুশি হয়। মানুষ এখন আমার মত উদ্যোক্তা হতে চায়। দেখতে দেখতে হয়তো একদিন উদ্যোক্তারাও সম্মানিত হবে এই সমাজে। আমার উদ্যোগের প্রাপ্তিসমূহঃ প্রাপ্তি বলতে যদি এওয়ার্ড হয় তাহলে সেরকম কিছু আমার এখনো হয়নি। তবে একজন উদ্যোক্তা হিসেবে আমি কাস্টমার এর কাছে যে ভালোবাসা পেয়েছি তাই আমার প্রাপ্তি। আমার ব্যবসায়িক জীবনের ২ বছর এ ৬০০+ কাস্টমার পেয়েছি। সুন্দর সুন্দর রিভিউ পেয়েছি আলহামদুলিল্লাহ। আমার কাছে প্রাপ্তি বলতে কাস্টমার এর হাসিভরা মুখ আর সন্তুষ্টি। এই ২টো পেয়ে আমি অনেক কিছু পেয়েছি আলহামদুলিল্লাহ। এখনো শুধু কাস্টমারের সন্তুষ্টি আর দোয়া ই আমার জন্য প্রয়োজন। আমার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাঃ ভবিষ্যতে অনেক কিছুই করার ইচ্ছে আছে ইনশাআল্লাহ। অনেক প্ল্যান ও করেছি। আমার উদ্যোগ এর বোরকা আর পাঞ্জাবীর পরিধি আরও বাড়াবো। আমি চাঁদপুর জেলার প্রাণকেন্দ্র হাজীগঞ্জ এ কর্মসংস্থান তৈরি করবো ইনশাআল্লাহ। যেখানে কাজ করবে অসহায় মেয়েরা। আমার শহরে এমন অনেক মেয়ে আছে যাদের কাজের আগ্রহ আছে কিন্তু সঠিক জায়গা পাচ্ছে না কাজ করার। তাদের জন্য ব্যবস্থা করা আমার দায়িত্ব। তাই বেশি করে কাজে ফোকাস করছি। আমার কাজ ই আমায় আজ এই পরিকল্পনা করার জায়গায় নিয়ে এসেছে। আজ আমি এই পর্যায়ে এসেছি আমার উদ্যোগের কারনে। তার জন্য সুন্দর পরিকল্পনা করার দরকার ছিলো। তা করেছি বলে আজ আমি এইখানে। ইনশাআল্লাহ ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা আরও সুন্দর করে করবো। ভবিষ্যৎ উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীদের জন্য কিছু কথাঃ যারা উদ্যোক্তা হতে চাও কিংবা ব্যবসা করে নিজেকে স্বাবলম্বী করতে চাও তাদের প্রথমে চিন্তা করতে হবে সমাজ কি বলতেছে, লোকেরা কি বলতেছে, তা না ভেবে এগিয়ে যাওয়া। কাজের প্রতি ভালোবাসা, বিশ্বাস আর কনফিডেন্স থাকলে কেউ থেমে থাকবেনা ইনশাআল্লাহ। একজন উদ্যোক্তা কে কখনো ছোট করে দেখা যাবেনা। কারন, একদিন এই উদ্যোক্তাই সম্মানের চরম জায়গায় পৌছবে। আমরা নারী আমরা পারি। তাই দৃষ্টিভঙ্গি বদলান, সমাজ বদলে যাবে। সুতরাং সমাজ, সমাজের মানুষ কে কি বলছে এসব না ভেবে আপনি যে স্বপ্ন দেখছেন তার পিছনে লেগে থাকুন। দেখবেন আপনিই সেরা। লেখকঃ নাসরিন আক্তার ইমু উদ্যোগঃ Fashion Floora By Emu ও ইমুর পিঠা বাড়ী