শাড়ি ও নকশি শিল্প নিয়ে শামীমার এগিয়ে চলার গল্প !

শাড়ি ও নকশি শিল্প নিয়ে শামীমার এগিয়ে চলার গল্প !
Spread the love

শাড়ি ও নকশি শিল্প নিয়ে শামীমার এগিয়ে চলার গল্প !

শাড়ি ও নকশি শিল্প নিয়ে এগিয়ে চলছেন নারী উদ্যোক্তা শামীমা হোসাইন ছন্দা ! তিনি হাতের কাজের নকশার পাশাপাশি সমানতালে কাজ করে যাচ্ছেন টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি নিয়ে। এই পর্বে আমরা জানবো তার শাড়ি ও নকশি শিল্প নিয়ে এগিয়ে চলার গল্প।

উদ্যোক্তা শামীমা হোসাইন ছন্দাঃ

আমি শামীমা হোসাইন ছন্দা। আমার জন্ম এবং বেড়ে ওঠা চট্টগ্রামেই। যদিও জন্মস্থান ভোলা। আমি BBA করেছি BGC Trust University Bangladesh থেকে। এবং MBA  করেছি Chittagong University Center For Business Administration (CUCBA) থেকে।

আমার উদ্যোক্তা জীবন শুরু করার কারণঃ

আমি আসলে উদ্যোক্তাই হতে চেয়েছিলাম। কারন, আমি প্রতিযোগীতা ভয় পেতাম না। কিন্তু চাকরির জন্য যে জঘন্য এক প্রতিযোগীতার ভিতর দিয়ে যেতে হয় এটা আমার একেবারেই পছন্দ ছিল না। আর কেন জানিনা ছাত্র জীবন থেকেই আমার মনে হতো আমি চাকরি করি বা না করি, নিজে কিছু একটা করবো। এমন কোন কাজ যেটার শুরু থেকে শেষ সবটাই আমার।

আমার উদ্যোক্তা জীবনঃ

আমি যখন MBA প্রথম সেমিস্টারে তখনই উদ্যোগ শুরু করি। হাতের কাজের উপর আমার ভীষণ দুর্বলতা ছিল। আমার ডিজাইন করতে খুব ভালো লাগতো। তাই হাতের কাজের সেলোয়ার-কামিজ দিয়েই উদ্যোগ শুরু করি। এরপর এর পরিধি বাড়িয়েছিলাম। বাচ্চাদের নকশীকাঁথা, বড়দের নকশীকাঁথা, বিছানার চাদর ইত্যাদি নিয়েও কাজ করেছিলাম। আর এসবই ছিল হাতের কাজ। সেটাই ছিল আমার উদ্যোগ। আমার উদ্যোগের নাম দিয়েছিলাম Tidy Fashion Wear. বর্তমানে আমি শাড়ি ও নকশি শিল্প নিয়ে কাজ করছি।
শাড়ি ও নকশি শিল্প নিয়ে শামীমার এগিয়ে চলার গল্প !
ছবিঃ নকশি থ্রি-পিছ !

আমার ব্যবসায়িক জীবনঃ

আমি শুধুমাত্র হাতের কাজের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিলাম না। হাতের কাজের পণ্যগুলো ছিল আমার সিগনেচার পণ্য। এর পাশাপাশি আমি পাইকারিভাবেও বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বড় যে পাইকারি বাজার আছে সেখান থেকেও পণ্য সংগ্রহ করেছি। সেখানে ছিল থ্রি-পিস, কুর্তি, শাড়ি ইত্যাদি। আমি একই সাথে আমার উদ্যোগ এবং ব্যবসা দু’টোই পরিচালনা করেছি। শাড়ি ও নকশি শিল্প নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।

আমার উদ্যোগের পন্যঃ

বর্তমানে আমার উদ্যোগ হাতের কাজের পণ্যতে নতুন কিছু সংযোজন হয়েছে তা হলো- হাতের কাজের ব্যাগ এবং মাস্ক এবং আমার ব্যবসাতে নতুন এসেছে টাঙ্গাইলের তাঁতীদের তৈরি সব ধরনের শাড়ি।

আমার উদ্যোগ/ব্যবসার বৈশিষ্ট্য বা গুনাবলীঃ

আমি যদি উদ্যোগের বৈশিষ্ট্য নিয়ে বলি তাহলে বলবো আমার পণ্যের ডিজাইনগুলো একেবারেই ভিন্নরকম হবে। কারণ, এই ডিজাইনগুলো নিজস্ব কারিগর দিয়ে নকশা করা, কাজ করা। তাই বাজারের অন্যান্য পণ্যের সাথে মিলবে না। আর, আমার ব্যবসার মূল বৈশিষ্ট্য হচ্ছে আমি দেশি পণ্য নিয়ে কাজ করছি। বর্তমানে আমাদের দেশের টাঙ্গাইলের শাড়ি নিয়ে কাজ করছি। টাঙ্গাইলের শাড়ি এখন বিশ্ব বিখ্যাত শাড়ি, সেটা এখন আর বলার অপেক্ষা রাখে না। আর, এই শাড়িগুলোর একটা গুনাবলী হলো যুগের সাথে তাল মিলিয়ে অনেক নতুনত্ব এসেছে শাড়িগুলোতে।
শাড়ি ও নকশি শিল্প নিয়ে শামীমার এগিয়ে চলার গল্প !
ছবিঃ নকশি থ্রি-পিছ !

আমার পন্যের বর্তমান চাহিদাঃ

হাতের সুঁই-সুতা দিয়ে কাজ করা পণ্যের চাহিদা সব সময়ই ছিল। হাতের কাজের পণ্যের চাহিদা কখনোই শেষ হবে না। আর এই সুঁই-সুতার কাজগুলোর মধ্যে যখন নতুন নতুন পণ্য সংযোজন করা হচ্ছে তখন চাহিদা আরো বেড়ে যাচ্ছে। যেমনঃ একটা সময় মাস্ক নিয়ে কাজ করবো কখনো ভাবি নি। কিন্তু, এখন এই পণ্য নিয়ে কাজ করছি এবং এর বেশ চাহিদাও আছে। এটা হাতের কাজের পণ্যগুলোর মধ্যে নতুন সংযোজন।

এরপর যদি টাঙ্গাইলের শাড়ির কথা বলি, তাহলে বলবো আজ থেকে ৫ বছর আগে মানুষ এই শাড়ি সম্পর্কে জানতো না। এখন ই-কমার্স এবং এফ-কমার্সের সহায়তায় হাজার হাজার উদ্যোক্তা আমাদের দেশি পণ্যগুলোকে তুলে ধরতে পারছে এবং প্রচার করছে। আমি নিজেও এক সময় জানতাম না, টাঙ্গাইলের শাড়ি গুলোতে এত ভেরিয়েশন আছে। এখন কাজ করতে গিয়ে দেখলাম, জানলাম। আমার মত অনেকেই জানছেন এবং জানাচ্ছেন। তাই এই শাড়িগুলোর চাহিদা অনেক বেড়ে গেছে।

আমার পন্যের ভবিষ্যৎ চাহিদাঃ

যুগের সাথে তাল মিলিয়ে সব কিছুই পরিবর্তন হয়। একটা সময় পর্যন্ত সবাই বিদেশি পণ্য বেশি পছন্দ করতো। কিন্তু, এখন দেশীয় পণ্য নিয়ে সবাই জানতে পারছে এবং পছন্দও করছে। আমার হাতের কাজের পণ্য বলতে শুধু সেলোয়ার কামিজ ছিল। এর সাথে এখন ব্যাগ, মাস্ক যুক্ত হয়েছে। সবাই এখন ম্যাচিং করে ড্রেস, ব্যাগ, মাস্ক পরতে ভালবাসেন। এভাবে নতুন নতুন সংযোজনগুলো মানুষের মাঝে চাহিদা বাড়াবে। আগ্রহী হবে এসব পণ্য কিনতে।
শাড়ি ও নকশি শিল্প নিয়ে শামীমার এগিয়ে চলার গল্প !
ছবিঃ তাঁতের শাড়ি !
আর, টাঙ্গাইলের শাড়িগুলোর চাহিদা এমনিতেই বেশি। তবে দিন দিন আরো বাড়বে। একটা সময় ছিল যখন টাঙ্গাইলের শাড়ি বলতে সবাই নকশী পাড়ের সুতি শাড়িই জানতো। কিন্তু এখন টাঙ্গাইলের তাঁতীরা কেবল সুতি শাড়িতে সীমাবদ্ধ নেই। এখন টাঙ্গাইলের শাড়িগুলোর মধ্যে আছে সিল্ক, সফট সিল্ক কাতান, কাতান, হাফ সিল্ক, হাফ সিল্ক জামদানি, সুতি জামদানি, বালুচুরিসহ আরো অনেক রকম শাড়ি। যুগে যুগে এই শাড়িগুলোর ডিজাইনে অনেক পরিবর্তন এসেছে এবং সামনে আরো আসবে। এইগুলো আমাদের দেশের তৈরি করা পণ্য। তাই শাড়িগুলোর দামটাও হাতের নাগালে সবার। মানুষ যখন টাঙ্গাইলের তাঁত শিল্প নিয়ে জানবে তখন আরো আগ্রহী হবে এই শাড়িগুলো কিনতে।

যাদের সাপোর্ট পেয়েছিঃ

সবার প্রথমেই বলবো আমার হাজবেন্ড এর কথা। লাইফ পার্টনার যদি সাপোর্ট না করে তাহলে কখনোই সামনে এগিয়ে যাওয়া যায় না। সে স্বামীই হোক অথবা স্ত্রী। আমার যখন বিয়ে হয় তখন আমি BBA ৩য় সেমিস্টারে ছিলাম। এর পর MBA পর্যন্ত তার সাপোর্ট ছাড়া আমি কখনোই আসতে পারতাম না। আমার উদ্যোগের শুরুটাও তার হাত ধরে।
এখন আমার ১৪ মাসের একটা ছেলে আছে। আমার সংসারে ছেলেকে দেখাশোনা করার কেউ নেই। তার সাপোর্ট না পেলে আমি কখনোই এই বিজনেস নিয়ে এগিয়ে যেতে পারতাম না। আর, এর পরেই আছে আমার মা-বাবা এবং আমার ভাইয়েরা। মানুষের জীবনে পরিবার খুবই গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্ট। একটা সুন্দর পরিবার যে পেয়েছে সে খুবই ভাগ্যবান। আমার উদ্যোগের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত আমার পরিবার নানাভাবে আমার পাশে ছিল।
এগিয়ে চলছেন নারী উদ্যোক্তা শামীমা হোসাইন ছন্দা
ছবিঃ তাঁতের শাড়ি !

উদ্যোক্তা জীবনের বাধা-বিপত্তিঃ

সবারই প্রথম দিকটায় অনেক স্ট্রাগল করতে হয়। কেউ হয়তো সাপোর্ট পায় না। কারো হয়তো আর্থিক সমস্যা থাকে। অথবা আরো অনেক সমস্যা থাকে। আমি যদি আমার কথা বলি, তাহলে বলবো আমার পরিবার থেকে আমার কোন বাঁধা ছিল না। আমার যেটা প্রব্লেম ছিল তা হলো সমাজ। আমরা মানুষ সামাজিক জীব। আমরা সবাই কিন্তু সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা চাই। আমরা যতই ভাব নেই না কেন “কে কি বললো আমার কিছু যায় আসে না” – কিন্তু এটা একটা শান্তনা বাক্য। আমাদের সত্যিই যায় আসে। আমরা চাই সমাজে সম্মানের সাথে বাঁচতে। আমি বিভিন্ন গ্রুপে কন্টেন্ট লিখি। সেসব গ্রুপে অপরিচিত মানুষের শুভকামনায় ভেসে যায় কমেন্টস সেকশান। কিন্তু কোন পরিচিত মানুষ লাইক দেয় না।

আমার BBA এবং MBA মেজর ছিল ফাইন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং। রেজাল্টও ছিল খুব ভাল। এত ভাল একটা সাবজেক্ট নিয়ে পড়ালেখা করে সাধারণত সবাই ব্যাংক কিংবা অন্যান্য ফিন্যান্সিয়াল কোম্পানি তে জয়েন করে। কিন্তু ঐযে আমি উদ্যোক্তা হবো এই স্বপ্ন ছিল। তাই, এম বি এ প্রথম সেমিস্টার থেকেই আমি কাজ শুরু করে দেই। আমার পরিবার থেকে কোন বাঁধার সম্মুখীন আমি হইনি ঠিক ই। কিন্তু, চারপাশের মানুষ ব্যাপার টা একদমই ঠিক ভাবে নেয় নি। আমি অনেক শখ করে কাজটা শুরু করি। আমি ভাবতাম আমার এত ফ্রেন্ড, আত্নীয়-স্বজন সবাই আমাকে সাপোর্ট করবে। কিন্তু দেখলাম সাপোর্ট তো দূরের কথা এটা নিয়ে সবাই আমাকে এক রকম অপমান করতে শুরু করলো। ব্যাপারটা এমন যে আমার রুচি এত খারাপ যে আমি এত পড়ালেখা করে কাপড় বিক্রি করছি।

আমার দক্ষতা, আমার যোগ্যতা, সব কিছু যেন তখনই প্রমাণ হবে যখন আমি একটা ভাল জব পাবো। স্রোতে যে আমি গা ভাসাইনি তা কিন্তু না। আমার ব্যবসার পাশাপাশি আমার এম বি এ শেষ হওয়ার পর ৭-৮ ঘন্টা পড়তাম শুধু জবের জন্য। কিন্তু আমি এতে কোন আনন্দ পেতাম না। আমার মনে হতো আমি আরো কোর্স করি, আরো পড়াশোনা করি। আমার বিভিন্ন কোর্স করার একটা নেশা আছে। আমার মনে হয় একটা জব পেয়ে যাওয়াটাই সাকসেস না। বিজনেস করছি, আনন্দ পাচ্ছি, আবার নিজের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য সময়ও পাচ্ছি। তারপরও অনেকেই বললো যতদিন সার্টিফিকেট এ বয়স আছে জবের জন্য ট্রাই করে যাও। আমি একরকম সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগতে লাগলাম।

এগিয়ে চলছেন নারী উদ্যোক্তা শামীমা হোসাইন ছন্দা
ছবিঃ তাঁতের শাড়ি !

এগিয়ে চলার মুহুর্তঃ

মন বলে ব্যবসা, সমাজ বলে চাকরি। এভাবেই চলছিলো। এরই মাঝে কোভিড চলে আসলো। লক ডাউন পরলো। হঠাৎ খুব ভয় পেয়ে গেছি। যেটা আমাকে মানসিকভাবে ভীষণ অসুস্থ করে দিল। আমার থাইরয়েড, হাই প্রেসারসহ নানা রোগ রয়েছে। ঐ সময়টা আমাকে একেবারেই ঘরবন্দী হয়ে যেতে হলো। তার একমাস পরই আমি জানতে পারি আমি প্রেগন্যান্ট। বিয়ের পর ৭ বছর চেষ্টা করেছি। কিন্তু প্রেগ্ন্যান্সি আসে নি। আসলো হঠাৎ লক ডাউনে, করোনাকালীন সময়ে। যে সময়টাতে ডাক্তাররা নিষেধ করছে বাচ্চা নিতে। যাইহোক, এর মধ্যে ধরা পরলো ডায়বেটিস। এক দিকে করোনার ভয়, অন্যদিকে হাই রিস্ক প্রেগ্ন্যান্সি, সব মিলিয়ে আমি প্রচন্ড ডিপ্রেশনে চলে যাই। বন্ধ হয়ে যায় জবের প্রস্তুতি, বন্ধ হয়ে যায় ব্যবসা।

আমি ভালোই সাড়া পাচ্ছিলাম। কয়েকবার বিভিন্ন মেলায় স্টল দিয়েছি। অনেক ভাল অভিজ্ঞতা হয়েছে। অনেকের সাথে পরিচিত হয়েছি। আলহামদুলিল্লাহ আমার বেশ ভালোই চলছিলো বিজনেস। এরপর করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলো, ছেলের এক বছর পার হলো। আমি বেশ কয়েক মাস হলো ই-কমার্স এর সাথে আছি। ফেসবুক গ্রুপগুলোতে আছি। এত অল্প সময়ে আমি ভালোই সাড়া পেয়েছি। আমার একলা সংসার, হাজবেন্ড তার কর্মস্থলে চলে যাওয়ার পর বাচ্চাকে একাই সামলাই। রাত জেগে কন্টেন্ট রেডি করি। বিভিন্ন গ্রুপে লিখি। সেসব পোস্টগুলোতে শুভ কামনার ফুলঝুরি বয়ে যায়। কত কত অচেনা মানুষ শুভকামনা দেয়। কিন্তু সেখানে একটা লাইক বা একটা কমেন্টস থাকে না আমার পরিচিত কোন মানুষের।

গত ৫ বছরে যখনই কেউ শুনেছে আমি বিজনেস করছি বা উদ্যোক্তা তখন কেউ আমাকে বলেনি–” বাহ! চমৎকার, শুনে খুশি হলাম তুমি একজন উদ্যোক্তা” বরং সবার পালটা প্রশ্ন ছিল জবের জন্য ট্রাই করো না কেন? চেষ্টা করো না কোথাও?? ব্যাপারটা এমন যে, যখন কেউ জব পায় না তখন সে উদ্যোক্তা/ব্যবসায়ী হয়। যার জব করার যোগ্যতা নাই সে ব্যবসা করে। তবুও এগিয়ে যাচ্ছি নিজের চেষ্টায়, পরিবারের সহায়তায়। হয়তো এমন একটা দিন আসবে যখন একজন উদ্যোক্তা/ব্যবসায়ী সমাজে তার যথাযথ সম্মান পাবে।

আমার উদ্যোগের প্রাপ্তিসমূহঃ

প্রাপ্তি বলতে যদি বলা হয় এওয়ার্ড বা সার্টিফিকেট তবে না, সেরকম কোন প্রাপ্তি এখনো হয় নি। তবে, একজন উদ্যোক্তা/ব্যবসায়ীর সত্যিকার প্রাপ্তি হচ্ছে কাস্টমার এর সন্তুষ্টি। ৫ব ছরের মধ্যে ২বছর ব্যবসা বন্ধ ছিল কিন্তু বাকি ৩ বছর আমি ১ হাজার+ কাস্টমার পেয়েছি আলহামদুলিল্লাহ। এর মধ্যে রিপিট কাস্টমার আছে অনেক। ভালো রিভিউ পেয়েছি, ক্রেতার সন্তুষ্টিও পেয়েছি।
এগিয়ে চলছেন নারী উদ্যোক্তা শামীমা হোসাইন ছন্দা
ছবিঃ তাঁতের শাড়ি !

আমার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাঃ

ভবিষ্যতে অনেক কিছুই করার ইচ্ছা, অনেক কিছুই প্ল্যান করেছি। আমার উদ্যোগ হাতের কাজের পণ্যগুলোর পরিধি বাড়াবো ধীরে ধীরে। সবাই সুঁই-সুতা দিয়ে কাজ করতে পারে না, ভাল নকশা তুলতে পারে না। যারা পারে অবশ্যই এটা তাদের একটা গুন। আর, এই গুনটাকে কাজে লাগিয়ে যেন কর্মসংস্থান এর ব্যবস্থা করা যায়, এটা নিয়েই ভবিষ্যতে কাজ করার ইচ্ছা আছে। কোন কোন পণ্যতে হাতের কাজ নিয়ে কাজ করা যায়,সেটা নিয়েও আমি ভাবছি।

আর, ব্যবসার কথা যদি বলি, আমি এখন টাঙ্গাইলের শাড়িগুলোতে ফোকাস করছি বেশি। টাঙ্গাইলের শাড়ি মানে কেবল সুতি শাড়ি এই ধারণা থেকে সবাইকে বের করে এনে বোঝাতে হবে টাঙ্গাইলে আরো অনেক ধরনের শাড়ি আছে। এর জন্য প্রয়োজন বেশি বেশি প্রচার। আর, শুধু টাঙ্গাইল না আমার ইচ্ছা আছে ভবিষ্যতে আমি আমাদের দেশের তাঁতীদের তৈরি অন্যান্য শাড়ি নিয়েও কাজ করার।

ভবিষ্যত উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীদের জন্য কিছু কথাঃ

যারা উদ্যোক্তা হতে চায় অথবা ব্যবসা করতে চায় তাদের প্রথমেই যেটা করতে হবে তা হলো লোকে কি বলবে, সমাজ কি বলবে এটা নিয়ে চিন্তা না করা। সত্যি যদি নিজের কাজের প্রতি ভালবাসাটা থাকে, কাজটা করতে ভালো লাগে এবং ভিতরে কনফিডেন্স থাকে তাহলে কারো কথায় যেন থেমে না যায়। আমাদের দেশে একজন উদ্যোক্তা/ব্যবসায়ীর স্ট্যাটাস সব সময়ই একজন চাকুরিজীবীর নিচে এটা মেনেই আসতে হবে। আর, এটা বিশ্বাস রাখতে হবে, একদিন সমাজের এই চিন্তা ভাবনাগুলো পরিবর্তন হবে। যখন অনেক অনেক শিক্ষিত ছেলেমেয়েরা শুধুমাত্র চাকরির পিছনে না ছুটে ব্যবসাতে মনোযোগ দিবে, চাকরির মত ব্যবসাটাও যখন অনেকগুলো মানুষের প্রথম প্রায়োরিটি হবে তখন এর স্ট্যাটাসটাও বেড়ে যাবে। তাই, সমাজ, স্ট্যাটাস এসব না ভেবে স্বপ্নটার পিছনে লেগে থাকতে হবে।

লেখকঃ শামীমা হোসাইন ছন্দা
উদ্যোগঃ Tidy Fashion Wear

Avatar
Jannatun Naime
This is Jannatun Naime. I live in Dhaka, Bangladesh area. My hometown is Chandpur District. I am an Entrepreneur ,Teacher, Blogger and Media Activist. Also a freelancer. These are Graphics Design, Digital Marketing, Video Editing, Content Writing, Content Creator, SEO expert etc with 5 years of experience in the field. I always ‍like to read and write any subject. This website is my personal website. I am a woman who always loves to learn new things and spread it through writing. That’s why I started this blog. The main focus of my writing is to know and write about my country, my district, travel story, freelancing, information and communication technology, science, e-commerce, weaving and crafts, entrepreneurs story, our lifestyle, our cuisine etc. https://jannatunnaime.com
https://jannatunnaime.com/
Top

You cannot copy content of this page