যোগাযোগ কি? যোগাযোগের পদ্ধতি ও মাধ্যমগুলো কি কি ?? তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি by Jannatun Naime - August 24, 2021January 28, 20220 Spread the love যোগাযোগ কি? যোগাযোগের পদ্ধতি ও মাধ্যমগুলো কি কি ?? যোগাযোগ কি? তা সবার ই জানা প্রয়োজন ! বর্তমান সময়ে তথ্য প্রযুক্তির ক্রমবিকাশের ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থার অনেক উন্নতি হয়েছে ৷ তাই কোন ব্যক্তি চাইলে খুব সহজেই প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে যেইকোন সময় এক বা একাধিক ব্যক্তির সাথে যোগাযোগ করতে পারেন ৷ আর এই যোগাযোগ ব্যবস্থার মূল মাধ্যম হলো টেলিযোগাযোগ বা Telecommunication. টেলিযোগাযোগের উন্নয়নের ফলেই সম্ভব হয়েছে তাৎক্ষনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা ৷ আধুনিক টেলিযোগাযোগ যন্ত্রের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত কিছু যন্ত্র হচ্ছে মোবাইল ফোন, ল্যান্ড ফোন, ওয়াকিটকি, রেডিও, টেলিভিশন ইত্যাদি ৷ এই যন্ত্রগুলোর বিভিন্ন ধরনের টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্কের মাধ্যমে যোগাযোগ প্রক্রিয়াকে সম্ভব করে তোলে ৷ ইন্টারনেট, ই -মেইল, ফোন, ফ্যাক্স, অডিও-ভিডিও চ্যাটিং, এসএমএস, এমএমএস এবং ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমেও বিশ্বের যেকোন স্থানে সরাসরি যোগোযোগ স্থাপন করা যাচ্ছে ৷ উদাহরণস্বরুপ- বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে একাধিক প্রতিনিধি এখন এক ই সময়ে গ্রুপ কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে একে অপরের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারছেন ৷ স্কাইপি বা অন্যান্য ভিডিও চ্যাটিং ব্যবস্থার মাধ্যমেও বিশ্বের যেইকোন স্থান থেকেও যোগাযোগ করা যাচ্ছে ৷ আর তা সম্ভব হয়েছে বিশ্বগ্রাম বা গ্লোবাল ভিলেজের মাধ্যমে ৷ যোগাযোগ কি ?? যোগাযোগ হলো তথ্য আদান – প্রদানের একটি মাধ্যম , পন্থা বা উপায় ৷ আর সেটি হতে পারে মানুষ থেকে মানুষ কিংবা যন্ত্র থেকে যন্ত্র ৷ যোগাযোগ হচ্ছে এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে আমরা আমাদের মনের ভাব, চিন্তাধারা, অভিজ্ঞতা, অনুভূতি ইত্যাদি একে অপরের সাথে আদান – প্রদান করি বা প্রকাশ করি ৷ আর এই তথ্য আদান – প্রদানের মাধ্যমটিই হলো যোগাযোগ ৷ উদাহরণস্বরুপ – টেলিযোগাযোগ, ইমেইলিং কিংবা সরাসরি ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি ইত্যাদি ৷ যোগাযোগের ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো Communication. যার অর্থ হলো যোগাযোগ ৷ এটি ল্যাটিন শব্দ Communis থেকে এসেছে ৷ যার অর্থ হলো সাধারণ ৷ যোগাযোগের সংজ্ঞাঃ যোগাযোগব্যবস্থা সম্পর্কে বিভিন্ন বিজ্ঞানীদের মতামত রয়েছে ৷ নিম্মে তা উল্লেখ করা হলো—- গ্রিক দার্শনিক প্লেটো এর মতে, “Rhetoric is the winning of men’s minds by words.” এখানে Rhetoric শব্দটি প্লেটোর যুগে ব্যবহার করা হত ৷ যার অর্থ হলো যোগাযোগ ৷ রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অ্যারিস্টেটলের সংজ্ঞা অনুযায়ী যোগাযোগ হলো, “Communication is the search for all the available means of persuasion.” G.G. Brown এর মতে, “যোগাযোগ হলো এক ব্যক্তি হতে অন্যের নিকট তথ্যের আদান – প্রদান, হোক সেটা বিশ্বাসযোগ্য বা অবিশ্বাসযোগ্য, কিন্তু সেটা অবশ্যই বোধগম্য হতে হবে ৷” যোগাযোগের পদ্ধতিসমূহঃ যোগাযোগের পদ্ধতিকে দু’টি পদ্ধতিতে ভাগ করা হয়েছে ৷ যথাঃ- ১৷ একমুখী যোগাযোগঃ যখন কোন একজন ব্যক্তি কোন একটি প্রতিষ্ঠানে এক বা একাধিক ব্যক্তির সাথে যোগাযোগ করেন বা তথ্য আদান-প্রদান করেন সেই পদ্ধতিকে একমুখী যোগাযোগ বা ব্রডকাস্ট বলে ৷ যেমনঃ কোন একটি লাইভের অনুষ্ঠানে যখন একজন মানুষ একাধিক দর্শক বা শ্রোতাদের মাঝে তথ্য তুলে ধরেন অর্থাৎ মনের ভাব প্রকাশ করেন, অভিজ্ঞতা বা ব্যবসায়িক তথ্য প্রকাশ করেন আর শ্রোতারা তা লাইভের মাধ্যমে শুনেন বা শুনতে পারেন সেটাকে বলা হয় ব্রডকাস্ট বা একমুখী যোগাযোগ ৷ ২৷ দ্বিমুখী যোগাযোগঃ দ্বিমুখী যোগাযোগ হচ্ছে উভয় পক্ষের যোগাযোগ ৷ এই পদ্ধতিতে দুই পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা যায় বা তথ্য আদান-প্রদান করা যায় এবং উভয়পক্ষ থেকে পাল্টা জবাব পাওয়া যায় বা তথ্য পাওয়া যায় ৷ যেমনঃ টেলিফোন ও মোবাইল ফোনের মাধ্যমে একে অপরের সাথে যোগাযোগ বা কথোপকথন৷ যোগাযোগের পদ্ধতি ও মাধ্যমগুলো কি কি ?? যোগাযোগের মাধ্যম হলো চারটি ৷ এক, মৌখিক যোগাযোগ ৷ দুই, লিখিত যোগাযোগ ৷ তিন, অমৌখিক যোগাযোগ ৷ চার, গণ মাধ্যম ৷ ১৷ মৌখিক যোগাযোগঃ মৌখিক যোগাযোগগুলো হলো- মুখোমুখি বা সামনা সামনি সংলাপ বা আলাপ-আলোচনা ৷ বিভিন্ন সভা – সমাবেশের মাধ্যমে যোগাযোগ ৷ আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ ৷ ২৷ লিখিত যোগাযোগঃ লিখিত যোগাযোগগুলো হলো- বুলেটিন বা ম্যাগাজিন ৷ প্রতিবেদন তৈরি ৷ নিউজ ৷ গ্যাজেট ৷ পরিপত্র জারি ৷ ৩৷ অমৌখিক যোগাযোগঃ অমৌখিক যোগাযোগগুলো হলো- অঙ্গভঙ্গি বা শারিরীক ভাষা ৷ হাত নাড়াচড়া ৷ অভিব্যক্তি প্রকাশ ৷ মাথা নাড়ানো ৷ সাংকৃতিক চিহ্ন দেখানো ইত্যাদি ৷ ৪৷ গণ মাধ্যমঃ গণ মাধ্যম যোগাযোগগুলো হলো- রেডিও ৷ টেলিভিশন ৷ সংবাদপত্র ৷ ইলেকট্রিক মিডিয়া ৷ সুতরাং কোন ব্যক্তি চাইলে খুব সহজেই প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে যেইকোন সময় এক বা একাধিক ব্যক্তির সাথে যোগাযোগ করতে পারেন ৷ আর এই যোগাযোগ ব্যবস্থার মূল মাধ্যম ই হলো টেলিযোগাযোগ বা Telecommunication.