ভিডিও কনফারেন্সিং কি? এর কি কি সুবিধা রয়েছে? তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি by Jannatun Naime - December 23, 2022December 23, 20220 Spread the love ভিডিও কনফারেন্সিং কি? এর কি কি সুবিধা রয়েছে? ভিডিও কনফারেন্সিং এমন একটি মাধ্যম বা প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে মনিটর বা পর্দায় একাধিক ব্যক্তিবর্গ পরস্পরের সম্মুখীন হয়ে একে অপরকে দেখে কথোপকথনে অংশগ্রহণ করে এবং তা সম্ভব হয় টেলিকমিউনিকেশন প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতি ব্যবহারের মাধ্যমে ৷ আমরা ইতিমধ্যে আমাদের পূর্ববর্তী কনটেন্টেন্টের মাধ্যমে জেনেছি টেলিকনফারেন্সিং কি ৷ তাই অনেকেই হয়তো মনে মনে ভাববেন টেলিকনফারেন্সিং আর ভিডিও কনফারেন্সিং দু’টোই একই রকম ৷ মূলতঃ তা কিন্তু নয় ৷ এই দু’টোর মাঝে রয়েছে পার্থক্য ৷ তা হলো- টেলিকনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে অডিও, ভিডিও দুই ধরনের ই কনফারেন্স করা যায় ৷ অন্যদিকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে শুধুমাত্র ভিডিও কনফারেন্স করা যায় ৷ চলুন এবার বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক ৷ ভিডিও কনফারেন্সিং (Video Conferencing) ‘কনফারেন্স’ শব্দটির মূল অর্থ হলো, এক ই সময়ে একাধিক ব্যক্তিবর্গের সাথে মতবিনিময় করা বা আলোচনা-পর্যালোচনা করা ৷ যেমন- অনেক সময় দেখা যায় অফিসের বিভিন্ন কার্যাবলি নিয়ে আলোচনা করার উদ্দেশ্যে একাধিক ব্যক্তিবর্গের সাথে আলোচনা সভা বা মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয় ৷ সে ক্ষেত্রে কখনো কখনো কোন না কোন ব্যক্তি সেই সভায় সরাসরি উপস্থিত থাকতে না পারলেও ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপস্থিত থেকে সেই আলোচনা সভাতে অংশগ্রহণ করতে পারে ৷ বর্তমান সময়ে প্রযুক্তি এতটা এগিয়ে গিয়েছে যে, চাইলেই একের অধিক ব্যক্তিবর্গগণ দূর দূরান্তে থেকেও ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নানা সভা, সেমিনার, আলোচনা সভায়, মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণ করতে পারেন এবং একে অপরকে সরাসরি দেখতে ও শুনতে পারেন ৷ একেই বলে ভিডিও কনফারেন্সিং ৷ আরেকটু সহজ কথায় যদি বলি তা হলো, সরাসরি ভিডিওর মাধ্যমে বা ভিডিও লাইভের মাধ্যমে দূর দূরান্ত থেকে যে মিটিং বা সভাগুলো হয় তাকেই বলা হয় ভিডিও কনফারেন্সিং ৷ এই কনফারেন্স পৃথিবীর যে কোন প্রান্ত থেকেই সরাসরি ভিডিওর মাধ্যমে করা যায় এবং বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত আদান-প্রদান করা যায় ৷ যার ফলে দিন দিন এর গুরুত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে ৷ দূর দূরান্তে থেকেও কাছাকাছি থাকার মত সেবা পাওয়া যাচ্ছে Video Conferencing এর মাধ্যমে ৷ এটিকে ‘ভিজ্যুয়াল কোলাবোরেশন’ নামেও কেউ কেউ অভিহিত করে থাকেন এবং এটি গ্রুপ মিটিং বা গ্রুপওয়্যারেরও একটি ধরন বলতে পারেন ৷ ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের উপাদানসমূহ ওয়েবক্যাম ৷ ইন্টারনেট ৷ মডেম ৷ মাল্টিমিডিয়া কম্পিউটার ৷ ল্যাপটপ ৷ মাইক্রোফোন ৷ টেলিফোন সংযোগ ৷ প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার যেমন- স্কাইপ, ইয়াহু, ম্যাসেঞ্জার, গুগল মিট, জুম, ভাইবার, হোয়াটসঅ্যাপ, ইমো ইত্যাদি ৷ ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের সুবিধাসমূহ বিশ্বের যে কোন প্রান্ত থেকে খুব সহজেই বিভিন্ন সভা বা সেমিনারে অংশগ্রহণ করা যায় ৷ যাতায়াতের জন্য কোন প্রকার অর্থ ও সময় অপচয় হয় না ৷ বরং খুব দ্রুত অংশগ্রহণ করা যায় ৷ ঘরে বসেই অভিজ্ঞ ডাক্তারদের কাছ থেকে স্বাস্থ্য বিষয়ক পরামর্শ এবং বিভিন্ন চিকিৎসা নেওয়া যায় ৷ কোন স্থানে অর্থ ব্যয় করে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করার প্রয়োজন হয় না ৷ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রতিটি কনফারেন্সের ভিডিও রেকর্ড করা যায় ৷ ফলে কোন তথ্য বুঝতে না পারলে বার বার ভিডিওটি দেখে সঠিক তথ্য জেনে নেওয়া যায় ৷ কোন কারনে সভায় উপস্থিত না হলেও যেকোন সময় রেকোর্ডকৃত ভিডিও দেখে যে কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় ৷ বর্তমান সময়ে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে ভিডিও কনফারেন্স ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে এবং ভবিষ্যতে এর চাহিদা আরো বেড়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা যাচ্ছে ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক সম্পর্ক রক্ষায় ভিডিও কনফারেন্সিং ব্যাপক ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হচ্ছে ৷ যে কোনো স্থানে অবস্থান করেও যে কোনো সময় যে কোনো সরকারি কর্মকান্ড, অফিসিয়াল মিটিং, রাজনৈতিক কর্মসূচিসহ যে কোন অনুষ্ঠানে ভিডিওর মাধ্যমে অংশগ্রহণ করা যায় এবং বক্তব্য দেওয়া যায় ৷ পৃথিবীর যে কোন প্রান্ত থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্মপরিবেশ অবলোকন করা যায়, কর্মীদের মনিটরিং করা যায়, জরুরী অফিসিয়াল সাক্ষাৎসহ যে কোন ব্যবসায়িক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করা সম্ভব এবং পরিচালনা করা সম্ভব ৷ পরিশেষে, ভিডিও কনফারেন্সিং হলো যোগাযোগব্যবস্থার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন মাধ্যম ৷ এটি একটি অতি দ্রুততম, আধুনিক, প্রযুক্তিনির্ভর এবং কার্যকর মাধ্যম ৷ তাই এর জনপ্রিয়তাও দিন দিন বেড়েই চলেছে !!