পেইন্টিং নিয়ে তানজিলা জামানের এগিয়ে চলার গল্প ! উদ্যোক্তাদের গল্প নারী উদ্যোক্তার গল্প সফল উদ্যোক্তার গল্প by Jannatun Naime - June 26, 2022June 26, 20220 Spread the love পেইন্টিং নিয়ে তানজিলা জামানের এগিয়ে চলার গল্প ! পেইন্টিং আমাদের দেশীয় ঐতিহ্য, দেশীয় শিল্প। আর সেই শিল্প নিয়েই এগিয়ে চলছেন নারী উদ্যোক্তা শেখ তানজিলা জামান দোলন। এ পর্বে আমরা তার কাছ থেকেই জানবো তার এগিয়ে চলার গল্প। উদ্যোক্তা শেখ তানজিলা জামান দোলনঃ আমি শেখ তানজিলা জামান দোলন। যদিও আমি রংপুরের মেয়ে। কিন্তু ছোট থেকে বেড়ে ওঠা ঢাকায়। আমি বেসরকারি ইউনির্ভাসিটি থেকে মার্কেটিং নিয়ে এমবিএ মাস্টার্স করছি। আমার উদ্যোক্তা হওয়ার কারণঃ শখ থেকেই আমার উদ্যোক্তা জীবন শুরু হওয়া। ছোট বেলা থেকে আঁকি ঝুকি করতাম আর নিজস্ব ডিজাইনে তৈরি করা জামাকাপড় পরতাম। সেখান থেকেই হয়তো আমার উদ্যোক্তা হওয়ার জন্ম। আমি মনে করি এই পেশাটি আমার জন্য সবচেয়ে বেশি সুবিধাজনক। আমার উদ্যোগঃ ছোট বেলা থেকেই ডিজাইনার হওয়ার শখ ছিল আমার। ছোট থেকেই নিজস্ব ডিজাইনে তৈরি করা জামাকাপড় পরতাম আমি। সেই সাথে পেইন্টিং করা ছিল আমার শখ। তাইতো ডিজাইন আর পেইন্টিং নিয়েই আমার উদ্যোক্তা জীবন শুরু। তারপর থেকে নিজ উদ্যোগে কাজ শুরু করি। প্রথম কাজ শুরু হয় আমার সুপারি পাতা দিয়ে। নিজের জন্য কিনি ৫টা পাতা। ভাবলাম এটায় পেইন্ট করলে মন্দ হয় না। একটা পেইজ খুলে সেই ৫টা পাতা পেইন্টিং করে ছবি তুলে দেই। ব্যাস সেই ৫ টা পাতা ই আমার সেল হয়ে যায়। তারপর আগ্রহ আরও বেড়ে যায়। মাথায় আসে যদি রেশমি চুড়িতে হ্যান্ড পেইন্ট করি তাহলে তো মন্দ হয় না। সেই থেকে আমার উদ্যোগ শুরু হয় কাজের। ছবিঃ পেইন্টের গহনা ! আমার উদ্যোগের বৈশিষ্ট্য ও গুনাবলীঃ আমি প্রথমে কাজ শুরু করি সুপারি পাতা হ্যান্ড পেইন্ট নিয়ে। এরপর কাচের রেশমি চুড়ির উপর পেইন্ট নিয়ে। যেটা আমারই প্রথম উদ্যোগ ছিল। এরপর কাচবালা পেইন্ট, বিভিন্ন বোতল পেইন্টিং, শাড়ি পেইন্টিং এবং কাঠের গহনা পেইন্টিং এই সব কিছুরই নিজস্ব ডিজাইন দিয়ে পেইন্ট করতে থাকি আমি। আমার পেইজের প্রতিটি জিনিসই আমি নিজের মনের মত করে নকশা করি। যেন সব থেকে ভিন্ন হয়। আমি চাই সবাই যেন আমার পণ্যটা এক দেখায় চিনতে পারে। আর এই জন্যই আমার পেইজের নাম দেই “শিল্প বাহার Design by Tangela“। আমি বিসিক উদ্যোক্তা ফোরামের একজন সদস্য। আমি বিভিন্ন মেলায় অংশগ্রহণ করে থাকি। মেলাগুলোতে আমার পণ্যগুলো খুব সাড়া পায়। এতে করে আমি আরও বেশি উৎসাহিত হয়ে থাকি। এখন আমার ছোট একটা অফিসও রয়েছে। যেখানে সবাই এসে পণ্য নিতে পারে। আমার উদ্যোগের বর্তমান চাহিদাঃ আলহামদুলিল্লাহ আমি ২০১৭ সাল থেকে কাজ করলেও করোনার জন্য ২০২০ সালে নতুন করে উদ্যোগের গঠন পরিবর্তন করি। আমার প্রতিটি পণ্যেরই চাহিদা রয়েছে। রেশমি চুড়ি পেইন্টিং যেহেতু ভিন্ন মাত্রা এনেছে তাই এর চাহিদাও বেশি। শুধু দেশে নয় দেশের বাহিরেও আমার পণ্য নিয়ে থাকেন মালেশিয়া, জার্মানি, লন্ডন এর কাস্টমার আপুরা। আমি চাই ভবিষ্যতে যেন এর পরিসর আরও বৃদ্ধি পায়। ছবিঃ পেইন্টের চুড়ি ও ক্যানভাস ! ভবিষ্যত চাহিদাঃ এখন মানুষ বিদেশী পণ্যের প্রতি আসক্ত ছেড়ে দেশী পণ্যের উপর আসক্ত হচ্ছে। দিন দিন দেশীয় পণ্যের চাহিদা অনেক বেড়েছে। যে কোন অনুষ্ঠানে মানুষ দেশীয় পোশাকটাই এখন পছন্দ করে বেশী। যেহেতু আমি দেশীয় পণ্য নিয়ে কাজ করছি তাই ভবিষ্যতে এর চাহিদা আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আমি মনে করি। যাদের সাপোর্ট পেয়েছিঃ আলহামদুলিল্লাহ পরিবার থেকে বন্ধু-বান্ধুবীসহ সবাই আমাকে অনেক সার্পোট করেছে এবং এখনো করে যাচ্ছে। আমাকে তারা অনেক উৎসাহ দেন আমার কাজে।আর এখন আমার কাস্টমার আপুরাও আমার কাজে আমাকে অনেক উৎসাহ দিয়ে থাকেন। উদ্যোক্তা জীবনের বাধা-বিপত্তিঃ যে কোন কাজেই বাধা রয়েছে। বাধা ছাড়া সামনে এগিয়ে যাওয়া যায় না। তেমনি আমারও বাধা ছিল এবং আছে। সেই বাধাকে বাধা মনে না করে আমি সামনে এগিয়ে যাচ্ছি। আমার উদ্যোগের প্রাপ্তিঃ আমার উদ্যোগের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি হল আমার সম্মানিত ক্রেতাগণ। যখন আমার পণ্য পেয়ে প্রশংসা করে এবং পরবর্তীতে ভরসা রেখে আবার ক্রয় করে থাকে তখন প্রাপ্তিটা আমার সেখানেই। ভবিষ্যত পরিকল্পনাঃ ভবিষ্যত পরিকল্পনা হল আমার একটা বড় আউটলেট হবে যেখানে প্রতিটা পণ্য আমার ডিজাইন আর পেইন্টিংয়ের হবে। এখন আমার ছোট একটা অফিস আছে মিরপুর ৬ নম্বরে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন যেন আমি সামনে এগিয়ে যেতে পারি। লেখকঃ শেখ তানজিলা জামান দোলন উদ্যোগঃ শিল্প বাহার Design by Tangela