চাঁদপুরের ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থান লৌহগড় মঠ !

চাঁদপুরের ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থান লৌহগড় মঠ !
Spread the love

চাঁদপুরের ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থান লৌহগড় মঠ ! 

চাঁদপুরের ঐতিহাসিক দর্শনীয় একটি স্থান হচ্ছে লৌহগড় মঠ ৷  এই মঠে রয়েছে দুইজন অত্যাচারী রাজার ইতিহাস ৷  যা যুগের পর যুগ মানুষের মাঝে আজও বিচরন করছে ৷  এই মঠেই লৌহগড় রাজারা তাদের বিচারকার্য সম্পাদন করতেন ৷

লৌহগড় মঠের অবস্থানঃ 

লৌহগড় মঠের অবস্থান চাঁদপুর জেলার ফরীদগঞ্জ উপজেলার ১নং পশ্চিম বালিথুবা ইউনিয়নের চান্দ্রা বাজার হতে ১.৫ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে ডাকাতিয়া নদীর তীরে অবস্থিত ৷  ফরীদগঞ্জ সদর হতে ৭ কিঃ মিঃ দূরে লোহাগড় মঠটি ইতিহাসের স্বাক্ষী হিসেবে আজও দন্ডায়মান ৷  এই মঠটি লৌহগড়ের দুই জমিদার মিলে করেছিলেন ৷

মঠের ইতিহাসঃ

এই মঠের ইতিহাস থেকে জানা যায়, আজ থেকে প্রায় ৫০০ বছর আগে লৌহগড় জমিদার বাড়ির জমিদাররা এই এলাকাতে রাজত্ব করতেন ৷  বিভিন্ন তথ্য থেকে জানা যায়, এই এলাকাতে দুইজন প্রভাবশালী রাজা ছিলেন ৷  একজন ছিল লৌহ, আরেকজন গহড় ৷ তারা ছিলেন খুবই অত্যাচারী রাজা ৷  তাদের ভয়ে এই মঠের আশেপাশের রাস্তা দিয়ে কেউ শব্দ করে যেতে পারতোনা ৷

এমনকি মঠের পাশের ডাকাতিয়া নদীতে নৌকা চালাতে হতো নিঃশব্দে ৷  কারন, শব্দ পেলে তাদের উপর করা হতো নির্জাতন ৷  তাদের এই মঠ তৈরির মুল উদ্দেশ্য ছিল সবার কাছে তাদের প্রাসাদের অবস্থান জানিয়ে দেওয়া ৷  যাতে দূর থেকে যে কেহ বুঝতে পারে এখানে তাদের প্রাসাদ রয়েছে ৷  তারা তাদের আর্থিক প্রতিপত্তির নিদর্শন হিসেবে মঠের শিকড়ে একটি স্বর্নদও স্থাপণ করেন ।

লোকমুখে শুনা যায় সেই স্বর্নের ওজন ছিল প্রায় ১ মনের সমান ৷  জমিদারি প্রথা বিলুপ্তীর পর ঐ স্বর্নের লোভে অনেকেই মঠের শিকড়ে উঠার চেষ্টা করেন ৷  কেউ কেউ গুরুতর আহত হন আবার কেউ কেউ মৃত্যুবরনও করেন ৷  তবে বর্তমানে সেই স্বর্নদ আসলে কোথায় তার কোন সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি ৷  স্থানীয় লোকদের এখনো ধারনা, এই মঠের আশেপাশেই কোথাও সেই গুপ্তধন লুকিয়ে আছে ৷

চাঁদপুরের ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থান লৌহগড় মঠ !
চাঁদপুরের ঐতিহাসিক লৌহগড় মঠ !

লৌহগড় মঠের বর্তমান অবস্থাঃ

একটা সময় এই লৌহগড় মঠের কাছে আসতে সবাই ভয় পেত ৷  মঠের আশে পাশের এলাকাগুলো ছিল সম্পূর্ন বন-জঙ্গলে পরিপূর্ন ৷  তা ছাড়া এলাকার মানুষের মাঝে একটা ভ্রান্ত ধারনা ছিল যে, এখানে হয়তো ভূত-প্রেত বা খারাপ আত্নাদের বসবাস রয়েছে ৷  তাই তো সেই ভয়ে মঠের কাছে কেউ আসতে চাইতোনা ৷

তবে কালের পরিবর্তনে এখন সেই ভয়-ভীতি আগের থেকে অনেকটাই কমে গিয়েছে ৷  দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এখন অনেক পর্যটকই এখানে ঘুরতে আসছেন ৷  তবে এটি সত্যি যে, লৌহগড় মঠের স্থানটি বেশ নিরিবিলি ও নির্জন ৷  বর্তমানে এটি একটি চাঁদপুরের দর্শনীয় স্থান হিসেবে বেশ জনপ্রিয় ৷  এই মঠটি দেখার জন্য দূর দূরান্ত থেকে দর্শনার্থীদের আনাগোনাও দেখা যায় ৷

যাবেন যেভাবেঃ

লৌহগড় মঠের দূরত্ব চাঁদপুর শহর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার ৷  আপনি চাইলে চাঁদপুর শহর থেকে সিএনজি বা মোটর সাইকেলে করে ওয়ার্লেসের ভেতর দিয়ে চান্দ্রা বাজার হয়ে লৌহগড় মঠে যেতে পারেন ৷  এছাড়াও যারা হাজীগঞ্জ থেকে আসতে চান তারা চাইলে হাজীগঞ্জ থেকে ওয়ার্লেসের ভেতর দিয়ে চান্দ্রা বাজার হয়ে যেতে পারেন ৷  অথবা হাজীগঞ্জ থেকে সেন্দ্রার ভেতর দিয়ে কামতায় এসে চান্দ্রা বাজার হয়ে রিকশা কিংবা সিএনজি দিয়ে যেতে পারেন ৷

থাকবেন কোথায়ঃ

চাঁদপুর শহরে থাকার জন্য বেশ কিছু আবাসিক হোটেল রয়েছে ৷  আপনারা চাইলে আপনাদের পছন্দমত হোটেলগুলোতে থাকতে পারেন ৷  এদের মধ্যে রয়েছে হোটেল গ্র্যান্ড হিলিশা, মেঘনা রিসোর্ট, হোটেল তাজমহল, হোটেল গাজী, হোটেল শেরাটন  প্রভৃতি ৷  এ ছাড়াও আরো বেশ কিছু হোটেল রয়েছে এখানে ।

Avatar
Jannatun Naime
This is Jannatun Naime. I live in Dhaka, Bangladesh area. My hometown is Chandpur District. I am an Entrepreneur ,Teacher, Blogger and Media Activist. Also a freelancer. These are Graphics Design, Digital Marketing, Video Editing, Content Writing, Content Creator, SEO expert etc with 5 years of experience in the field. I always ‍like to read and write any subject. This website is my personal website. I am a woman who always loves to learn new things and spread it through writing. That’s why I started this blog. The main focus of my writing is to know and write about my country, my district, travel story, freelancing, information and communication technology, science, e-commerce, weaving and crafts, entrepreneurs story, our lifestyle, our cuisine etc. https://jannatunnaime.com
https://jannatunnaime.com/

Leave a Reply

Top

You cannot copy content of this page