চাঁদপুরের ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থান লৌহগড় মঠ ! চাঁদপুর জেলা চাঁদপুরের দর্শনীয় স্থান by Jannatun Naime - October 10, 2021January 30, 20220 Spread the love চাঁদপুরের ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থান লৌহগড় মঠ ! চাঁদপুরের ঐতিহাসিক দর্শনীয় একটি স্থান হচ্ছে লৌহগড় মঠ ৷ এই মঠে রয়েছে দুইজন অত্যাচারী রাজার ইতিহাস ৷ যা যুগের পর যুগ মানুষের মাঝে আজও বিচরন করছে ৷ এই মঠেই লৌহগড় রাজারা তাদের বিচারকার্য সম্পাদন করতেন ৷ লৌহগড় মঠের অবস্থানঃ লৌহগড় মঠের অবস্থান চাঁদপুর জেলার ফরীদগঞ্জ উপজেলার ১নং পশ্চিম বালিথুবা ইউনিয়নের চান্দ্রা বাজার হতে ১.৫ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে ডাকাতিয়া নদীর তীরে অবস্থিত ৷ ফরীদগঞ্জ সদর হতে ৭ কিঃ মিঃ দূরে লোহাগড় মঠটি ইতিহাসের স্বাক্ষী হিসেবে আজও দন্ডায়মান ৷ এই মঠটি লৌহগড়ের দুই জমিদার মিলে করেছিলেন ৷ মঠের ইতিহাসঃ এই মঠের ইতিহাস থেকে জানা যায়, আজ থেকে প্রায় ৫০০ বছর আগে লৌহগড় জমিদার বাড়ির জমিদাররা এই এলাকাতে রাজত্ব করতেন ৷ বিভিন্ন তথ্য থেকে জানা যায়, এই এলাকাতে দুইজন প্রভাবশালী রাজা ছিলেন ৷ একজন ছিল লৌহ, আরেকজন গহড় ৷ তারা ছিলেন খুবই অত্যাচারী রাজা ৷ তাদের ভয়ে এই মঠের আশেপাশের রাস্তা দিয়ে কেউ শব্দ করে যেতে পারতোনা ৷ এমনকি মঠের পাশের ডাকাতিয়া নদীতে নৌকা চালাতে হতো নিঃশব্দে ৷ কারন, শব্দ পেলে তাদের উপর করা হতো নির্জাতন ৷ তাদের এই মঠ তৈরির মুল উদ্দেশ্য ছিল সবার কাছে তাদের প্রাসাদের অবস্থান জানিয়ে দেওয়া ৷ যাতে দূর থেকে যে কেহ বুঝতে পারে এখানে তাদের প্রাসাদ রয়েছে ৷ তারা তাদের আর্থিক প্রতিপত্তির নিদর্শন হিসেবে মঠের শিকড়ে একটি স্বর্নদও স্থাপণ করেন । লোকমুখে শুনা যায় সেই স্বর্নের ওজন ছিল প্রায় ১ মনের সমান ৷ জমিদারি প্রথা বিলুপ্তীর পর ঐ স্বর্নের লোভে অনেকেই মঠের শিকড়ে উঠার চেষ্টা করেন ৷ কেউ কেউ গুরুতর আহত হন আবার কেউ কেউ মৃত্যুবরনও করেন ৷ তবে বর্তমানে সেই স্বর্নদ আসলে কোথায় তার কোন সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি ৷ স্থানীয় লোকদের এখনো ধারনা, এই মঠের আশেপাশেই কোথাও সেই গুপ্তধন লুকিয়ে আছে ৷ চাঁদপুরের ঐতিহাসিক লৌহগড় মঠ ! লৌহগড় মঠের বর্তমান অবস্থাঃ একটা সময় এই লৌহগড় মঠের কাছে আসতে সবাই ভয় পেত ৷ মঠের আশে পাশের এলাকাগুলো ছিল সম্পূর্ন বন-জঙ্গলে পরিপূর্ন ৷ তা ছাড়া এলাকার মানুষের মাঝে একটা ভ্রান্ত ধারনা ছিল যে, এখানে হয়তো ভূত-প্রেত বা খারাপ আত্নাদের বসবাস রয়েছে ৷ তাই তো সেই ভয়ে মঠের কাছে কেউ আসতে চাইতোনা ৷ তবে কালের পরিবর্তনে এখন সেই ভয়-ভীতি আগের থেকে অনেকটাই কমে গিয়েছে ৷ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এখন অনেক পর্যটকই এখানে ঘুরতে আসছেন ৷ তবে এটি সত্যি যে, লৌহগড় মঠের স্থানটি বেশ নিরিবিলি ও নির্জন ৷ বর্তমানে এটি একটি চাঁদপুরের দর্শনীয় স্থান হিসেবে বেশ জনপ্রিয় ৷ এই মঠটি দেখার জন্য দূর দূরান্ত থেকে দর্শনার্থীদের আনাগোনাও দেখা যায় ৷ যাবেন যেভাবেঃ লৌহগড় মঠের দূরত্ব চাঁদপুর শহর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার ৷ আপনি চাইলে চাঁদপুর শহর থেকে সিএনজি বা মোটর সাইকেলে করে ওয়ার্লেসের ভেতর দিয়ে চান্দ্রা বাজার হয়ে লৌহগড় মঠে যেতে পারেন ৷ এছাড়াও যারা হাজীগঞ্জ থেকে আসতে চান তারা চাইলে হাজীগঞ্জ থেকে ওয়ার্লেসের ভেতর দিয়ে চান্দ্রা বাজার হয়ে যেতে পারেন ৷ অথবা হাজীগঞ্জ থেকে সেন্দ্রার ভেতর দিয়ে কামতায় এসে চান্দ্রা বাজার হয়ে রিকশা কিংবা সিএনজি দিয়ে যেতে পারেন ৷ থাকবেন কোথায়ঃ চাঁদপুর শহরে থাকার জন্য বেশ কিছু আবাসিক হোটেল রয়েছে ৷ আপনারা চাইলে আপনাদের পছন্দমত হোটেলগুলোতে থাকতে পারেন ৷ এদের মধ্যে রয়েছে হোটেল গ্র্যান্ড হিলিশা, মেঘনা রিসোর্ট, হোটেল তাজমহল, হোটেল গাজী, হোটেল শেরাটন প্রভৃতি ৷ এ ছাড়াও আরো বেশ কিছু হোটেল রয়েছে এখানে ।