কাপ্তাই লেক এর অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ! আমার বাংলাদেশ বাংলাদেশের দর্শনীয় স্থান by Jannatun Naime - April 27, 20220 Spread the love কাপ্তাই লেক এর অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ! রাঙ্গামাটি জেলার অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লেক রূপসী কাপ্তাই লেক ৷ এ যেন পাহাড়ি এক স্বপ্নরাজ্য ৷ চারিদিকে মেঘ ছোঁয়া পাহাড়ি টিলা ও অরন্যের সবুঝ সমারোহের এক অপূর্ব লেক ৷ এখানে মিশে আছে জীবন আর প্রকৃতির নিবিড় মাখামাখি ৷ চিরচেনা এই বাংলাদেশে এ যেন এক অজানা আরেকটি দেশ ৷ রুপসী এই রাঙ্গামাটির প্রাণের ধারায় মিশে আছে বিখ্যাত এই কাপ্তাই লেকের মনোরম সৌন্দর্য ৷ কাপ্তাই লেকের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যঃ ভ্রমণ পিপাসুদের কাছে কাপ্তাই লেক মানে ধেয়ে চলার দারুন সুখ আর চোখ জুড়ানো সব মনোরম দৃশ্য ! পার্বত্য চট্টগ্রামের বুক জুড়ে অপরূপ এই নৈস্বর্গিক সৌন্দর্যের আভা ছড়িয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে এই লেক ৷ লেক জুড়ে রয়েছে বিস্তীর্ণ পাহাড়, টিলা, জলরাশি আর চোখ জুড়ানো সবুজের সমারোহ ! এখানকার ছোট-বড় পাহাড়, টিলা আর আঁকাবাঁকা পাহাড়ি রাস্তা, ঝর্ণা আর জলের সাথে রয়েছে চোখ জুড়ানো সবুজের মিতালী ! তাইতো কাপ্তাই লেকের এই অপূর্ব সৌন্দর্যকে উপভোগ করতে অসংখ্য পর্যটক ছুটে আসেন বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ! কাপ্তাই লেকের অবস্থানঃ কাপ্তাই লেকটি বাংলাদেশের দক্ষিণে অবস্থিত পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙ্গামাটি জেলায় অবস্থিত ৷ এর আয়তন প্রায় ১১,০০০ বর্গ কিলোমিটার ৷ এই হ্রদটি আয়তনে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বড় হ্রদ ৷ এই হ্রদের একদিকে রয়েছে পাহাড়, টিলা আর ঘন সবুজের সমারোহ ৷ অন্যদিকে লেকের জলে রয়েছে বহু প্রজাতির মাছ ও অফুরন্ত জীববৈচিত্র্য ৷ পাহাড়-টিলাগুলোতে রয়েছে বহু প্রজাতিক উদ্ভিদ ও প্রাণীর সম্ভার ৷ এ ছাড়াও রয়েছে নানা প্রজাতির পাখ-পাখালি ! তাইতো এখানকার জলকেন্দ্রিক মানুষের জীবনযাত্রা এক নিমিশেই মুগ্ধ করে সকলকে ৷ ছবিঃ কাপ্তাই লেক ! কাপ্তাই লেকের ইতিহাসঃ কাপ্তাই লেকটি ১৯৫৬ সালে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার জল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য কর্ণফুলী নদীর উপর কাপ্তাই বাঁধ নির্মাণ করেন ৷ এর ফলে রাঙ্গামাটি জেলার প্রায় ৫৪ হাজার একর জমি পানির নিচে ডুবে যায় ৷ তারপর সৃষ্টি হয় এই অপূর্ব সৌন্দর্যের হ্রদ কাপ্তাই লেক ৷ এই লেকের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মুগ্ধ করে সকলকে ৷ তাইতো নয়ানাভিরাম এই লেকের মনোরম দৃশ্য দেখার জন্য ভ্রমণপিপাসুরা ছুটে আসেন দূর দূরান্ত থেকে ৷ যা যা দেখতে পাবেনঃ নয়ানাভিরাম সৌন্দর্য দেথে কে না মুগ্ধ হতে চান ৷ তাইতো দূর দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন ভ্রমণপ্রেমীরা ৷ এই লেকে রয়েছে অসংখ্য দর্শনীয় স্থান ৷ লেকের চারপাশটা জুড়ে রয়েছে মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য ৷ প্রকৃতির এই অপার সৌন্দর্য উপভোগ করতে নৌকা বা বোটে করে লেকের জলে ভেসে বেড়াতে পারেন চারপাশটা ৷ এখানে নৌ বিহার কিংবা প্যাডেল বোটের মাধ্যমেও চাইলে ঘুরে বেড়াতে পারেন লেকে ৷ এছাড়াও স্পিডবোট কিংবা রিজার্ভ নৌকারও সুব্যবস্থা রয়েছে এখানে ৷ এই লেকের মনোরম দৃশ্য উপভোগ করার জন্য রয়েছে প্যারাডাইজ পিকনিক স্পট ৷ সরাসরি পাহাড় থেকে লেকের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে চাইলে এই পিকনিক স্পট থেকে ঘুরে আসতে পারেন ৷ এখানে রয়েছে ঝুলন্ত ব্রিজ ৷ ব্রিজে উঠে উপভোগ করা যায় লেকের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ৷ আর যদি ব্রিজের সৌন্দর্য দেখতে চান তাহলে নৌকায় করে জলে ভেসেও এই ব্রিজের সৌন্দর্য উপভোগ করা যায় ৷ কাপ্তাই লেকে রয়েছে অসংখ্য ঝর্ণা ৷ তার মধ্যে একটি হলো শুভলং ঝর্ণা ৷ চাইলে নৌকা ভ্রমণ করে এই ঝর্ণাটি খুব কাছ থেকে দেখে নিতে পারেন ৷ এই লেকের পাশেই রয়েছে শেখ রাসেল ইকোপার্ক ৷ এখানে রয়েছে ক্যাবল কারেরও ব্যবস্থা ৷ ছবিঃ ঝুলন্ত ব্রিজ ! কিভাবে যাবেনঃ এই লেকে যেতে হলে আপনাকে ঢাকার কলাবাগান ও সায়দাবাদ থেকে সোহাগ, হানিফ, ঈগল, সৌদিয়া, শ্যামলী বাসে করে যেতে পারেন ৷ এছাড়াও ট্রেন বা প্লেনে করে চট্টগ্রামে এসে সেখান থেকেও যেতে পারেন রাঙ্গামাটি ৷ খাবেন কোথায়ঃ লেকের মাঝখানে ছোট ছোট দ্বীপে কিছু খাবারের রেস্টুরেন্ট রয়েছে ৷ আপনি চাইলে সেখানেও দুপুরের খাবার খেতে পারেন ৷ এছাড়াও লেকের আশেপাশে আরো কিছু রেস্টুরেন্ট আছে যেমন- প্যারাডাইস ক্যাফে, জুম রেস্তোরা, বেরাইন্যে লেক, শোর ক্যাফে ইত্যাদি ৷ আরো রয়েছে নৌবাহিনীর ঘাঁটির কাছে ভাসমান একটি রেস্টুরেন্ট ৷ আপনি চাইলে সেখানেও খেতে পারেন ৷ থাকবেন কোথায়ঃ কাপ্তাই লেকে রাত্রিযাপনের জন্য তেমন ভালো মানের হোটেল/মোটেলের সুব্যবস্থা নেই ৷ তবে এখানে সরকারি রেস্টহাউজ, পিডিবি, সেনাবাহিনী, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বন বিভাগের কিছু রেস্টহাউজ রয়েছে ৷ আপনি চাইলে সেখানে আলোচনা করে থাকতে পারেন ৷ তবে সবচেয়ে ভালো পরিবেশে থাকতে চাইলে সব থেকে ভালো হয় রাঙ্গামাটি শহরে এসে থাকার ব্যবস্থা করা ৷ এখানে বেশ কিছু হোটেল/মোটেল রয়েছে ৷ যেমন – হোটেল গ্রীন ক্যাসেল, হোটেল সুফিয়া, হোটেল গোল্ডেন হিল, হোটেল লেক ভিউ, পর্যটন হলিডে কম্প্লেক্স ইত্যাদি ৷