ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থান মনসা মুড়া !

ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থান মনসা মুড়া
Spread the love

ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থান মনসা মুড়া !

বর্তমানে চাঁদপুর জেলার একটি ঐতিহাসিক নিদর্শন হলো কচুয়া উপজেলার দর্শনীয় স্থান মনসা মুড়া ৷  কালের বিবর্তনে মনসা মুড়াটি ঐতিহাসিক নিদর্শন হিসেবে স্থান পেয়েছে ৷  তাইতো দূর দূরান্ত থেকে প্রায় প্রতিদিনই মানুষজন ছুটে আসে মনসা মুড়া দেখতে ৷

ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থান মনসা মুড়ার অবস্থানঃ

চাঁদপুর জেলার ঐতিহাসিক নিদর্শন মনসা মুড়াটি কচুয়া উপজেলার ৪নং পূর্ব সহদেবপুর ইউনিয়নের ভুইয়ারা গ্রামে অবস্থিত ৷  এই মুড়াটি সুন্দরী খালের উত্তর পাশে খোলা মাঠে ২১টি বাঁশ ঝাড় নিয়ে গঠিত ৷  লোক মুখে শুনা যায়, এই বাঁশ ঝাড়টির উৎপত্তি হয়েছে সাপের দেবী মনসার সরাসরি তত্ত্বাবধানে ৷  তাইতো এই মুড়াটিকে পরিকল্পিত বাঁশ বাগান বলে মনে করা হয় ৷

মনসা মুড়ার ইতিহাসঃ

বহু বছর আগের কথা ! সাপের দেবী মনসা ও তার সঙ্গীরা সুন্দরখালের পাড় দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন ৷  হঠাৎ মাঝ পথে ক্লান্ত হয়ে যান মনসা ও তার সঙ্গীরা ৷  তাই বিশ্রাম নেওয়ার জন্য খালের পূর্বপাড়ে নৌকা ভেড়ান ৷  বিশ্রাম শেষে চলে যাওয়ার পথে মনসা সেখানে একটি বাঁশের চারা রোপন করে যান ৷  এর পর ধীরে ধীরে অসংখ্য বাঁশ সৃষ্টি হয় ৷  তারপর জন্ম হয় বিশাল একটি বাঁশের ঝাড় ৷  যেটি বর্তমানে মনসা মুড়া নামে পরিচিত ৷

লোক মুখে শুনা যায় , এই ঝাড়ে রয়েছে অসংখ্য সাপ ৷  মানুষের চলাফেরার কারনে দিনের বেলায় বাঁশের রুপ ধারন করা সেই সাপগুলো রাতের বেলায় জীবন্ত হয়ে উঠে ৷  এখানে চাইলেই কেউ বাঁশের পাতা ছিড়তে পারেনা ৷  এতে রয়েছে অলিখিত নিষেধাজ্ঞা ৷  প্রতিরাতে অদ্ভূত কোন এক নারীর কন্ঠ ভেসে আসে এই বাঁশ মুড়া থেকে ৷  তাইতো এই মুড়ার পরতে পরতে রয়েছে আধি ভৌতিকতার নানান উপাখ্যান ৷  তাই এখানে ভয় আর আতংকের মধ্যেও রয়েছে মৃত্যুরও অনেক অনেক উদাহরণ  ৷

অলৌকিক ঘটনাঃ

জানা গেছে, একদা এক ব্যক্তি মনসা মুড়ার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন ৷  হঠাৎ বাঁশের ঝাড়গুলো দেখে তিনি সেখান থেকে প্রয়োজনমত বাঁশ কেটে নেন ৷  তারপর থেকে তিনি বার বার ই স্বপ্নে দেখেন বাঁশ ফেরত দেওয়ার জন্য ৷  তা না হলে তার বংশের কোন লোক ই বাঁচবেনা ৷  লোকটি স্বপ্নে দেখার পরও বাঁশ ফেরত না দেওয়ায় তার নাকে মুখে রক্ত বের হয় । তারপর তিনি মারা যান ৷  এরপর তার পরিবারের সদস্যরা অর্থাৎ তার বংশধররা উক্ত বাঁশ ফেরত দিয়ে আসে  ৷

এ ছাড়াও আরেকটি ঘটনা রয়েছে মনসা মুড়া নিয়ে ৷  একদিন স্থানীয় কিছু লোক এক সাপুড়ে বহরের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয় ৷  যাতে মনসা মুড়া থেকে সাপ ধরে নেওয়া যায় ৷  যখন সাপুড়ে তার ‘বিন বাঁশি’ বাজাতে শুরু করলে তখন গর্ত থেকে বাঁশের পাতায় পাতায় ছোট ছোট সাপ একের পর এক উঠে আসে ৷  তারপর সাপুড়ে একটি সাপ ধরে পাতিলে রাখার সময় কামড় দিলে সাপুড়ের মৃত্যু ঘটে ৷  এরপর অন্য সাপগুলো যখন সাপুড়ের নৌকার দিকে যেতে শুরু করে তখন সাপুড়ের দল সাপটিকে ছেড়ে দিয়ে রাতের অন্ধকারে পালিয়ে যায় ৷  তারপর থেকে আর কোন সাপুড়ে সেখান থেকে সাপ ধরার কথা চিন্তাও করেননা ৷  এমনকি বাঁশের একটা পাতাও কেউ ছিড়েননা  ৷

বর্তমানে এই স্থানটি দেখতে দূর দূরান্ত থেকে বহু দর্শনার্থীরা ছুটে আসেন ৷ এটি একটি ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থান ৷ এই স্থানটি সম্পর্কে চাঁদপুর জেলার সকল মানুষ পূর্ব থেকেই কম-বেশি জানেন ৷ তারপর ধীরে ধীরে কালের বিবর্তনে এই ইতিহাস ছড়িয়ে পড়েছে সকলের মাঝে ৷ তৈরি হচ্ছে অসংখ্য নাটক, সিরিয়াল ও ছায়াছবি ৷ তাই তো এটি এখন চাঁদপুর জেলার একটি ঐতিহাসিক নিদর্শন হিসেবে বেশ পরিচিত ৷

Avatar
Jannatun Naime
This is Jannatun Naime. I live in Dhaka, Bangladesh area. My hometown is Chandpur District. I am an Entrepreneur ,Teacher, Blogger and Media Activist. Also a freelancer. These are Graphics Design, Digital Marketing, Video Editing, Content Writing, Content Creator, SEO expert etc with 5 years of experience in the field. I always ‍like to read and write any subject. This website is my personal website. I am a woman who always loves to learn new things and spread it through writing. That’s why I started this blog. The main focus of my writing is to know and write about my country, my district, travel story, freelancing, information and communication technology, science, e-commerce, weaving and crafts, entrepreneurs story, our lifestyle, our cuisine etc. https://jannatunnaime.com
https://jannatunnaime.com/

Leave a Reply

Top

You cannot copy content of this page