সাজেক ভ্যালিতে যাবেন কিভাবে ? থাকবেন কোথায় !

সাজেক ভ্যালিতে যাবেন কিভাবে ? থাকবেন কোথায় !
Spread the love

সাজেক ভ্যালিতে যাবেন কিভাবে ? থাকবেন কোথায় !

আমাদের কতইনা জল্পনা-কল্পনা-পরিকল্পনা থাকে ঘুরতে যাওয়ার ৷ কোথায় যাবো ? কোথায় থাকবো ? কোথায় খাবো এ নিয়ে থাকে নানান চিন্তাধারা ৷ যদি বলি সাজেক ভ্যালিতে যেতে চাই তাহলে সর্বপ্রথম জানতে হবে সাজেক ভ্যালি কোথায় অবস্থিত !

সাজেক ভ্যালির অবস্থানঃ

বাংলাদেশের একটি বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্র হচ্ছে সাজেক ভ্যালি ৷ এই পর্যটন কেন্দ্রটি বাংলাদেশের রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার অন্তর্গত সাজেক ইউনিয়নে অবস্থিত ৷ সাজেক হচ্ছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ইউনিয়ন ৷ যার আয়তন ৭০২ বর্গমাইল ৷

রাঙ্গামাটির একেবারে উত্তরে অবস্থিত এই সাজেক ভ্যালিতে রয়েছে দুইটি পাড়া – রুইলুই এবং কংলাক ৷ ১৮৮০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় রুইলুই পাড়া ৷ সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১,৭২০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত রুইলুই পাড়া ৷ আর কংলাক পাড়া অবস্থিত ১,৮০০ ফুট উচ্চতায় ৷ তাইতো সাজেক ভ্যালিকে বলা হয় রাঙ্গামাটি জেলার “রাঙ্গামাটির ছাদ ” ৷

সাজেক ভ্যালিতে যাবেন কিভাবে ? থাকবেন কোথায় !
সাজেক ভ্যালি

সাজেকের উত্তরে রয়েছে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য , দক্ষিণে রাঙ্গামাটির লংগদু , পূর্বে ভারতের মিজোরাম রাজ্য, পশ্চিমে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা অবস্থিত ৷ সাজেকে রয়েছে বিজিবি ক্যাম্প ৷ যা বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উঁচুতে অবস্থিত ৷ এ ছাড়াও রয়েছে হেলিপ্যাড ৷

সাজেকের সর্বত্রই রয়েছে মেঘমালা, পাহাড় আর সবুজের সমারোহ ৷ এখান থেকেই মুগ্ধ হয়ে দেখা যায় সূর্যোদয় আর সূর্যাস্তের অপূর্ব দৃশ্য ৷ সাজেকের সর্বোচ্চ চূড়া হচ্ছে কংলাক ৷ কংলাকে যেতে হলে রুইলুই পাহাড় থেকে ট্রেকিং করে যেতে হয় ৷

কংলাকে যাওয়ার পথে দেখা যায় ভারতের মিজোরাম সীমান্তের বড় বড় পাহাড় , আদিবাসীদের জীবনযাপন ও বৈচিত্র্য ৷ চারিদিকে থাকে মেঘের আনাগোনা ৷ এখানে প্রতি বছর নির্দিষ্ট সময়ে উপজাতীয়দের উৎসবও অনুষ্ঠিত হয় ৷

সাজেক ভ্যালিতে কখন যাওয়া যায়ঃ

সারা বছর ই সাজেক ভ্রমণ করা যায় কিন্তু ভরা বর্ষায় পাহাড়ি রাস্তায় ভ্রমণ না করাই উত্তম ৷ কারন , এই সময়ে পাহাড়ি রাস্তাগুলোতে ধ্বস নামতে পারে ৷ তাই বর্ষার শেষে এবং শীতের শুরুতে সাজেক ভ্রমনের জন্য আদর্শ সময় ৷ এ সময় মেঘেদের রাজ্যে মেঘও পাওয়া যায় প্রচুর ৷

সাজেক ভ্যালিতে যাবেন কিভাবে ? থাকবেন কোথায় !
সাজেক ভ্যালির রিসোর্ট

সাজেক ভ্যালিতে যাবেন যেভাবেঃ

সাজেকে যেতে হলে প্রথমে খাগড়াছড়ি জেলা থেকে চান্দের গাড়ির মাধ্যমে আঁকাবাঁকা উঁচু নিচু মেঠো পথ পাড়ি দিয়ে যেতে হবে ৷ আর এই দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে দিতে দেখতে পাবেন নীলাকাশ ৷ সাজেকের আরেকটি আকর্ষণীয় স্থান হলো আলুটিলা ৷ আলুটিলায় যেতে হলে আপনাকে যেটা করতে হবে, সাজেক থেকে ফিরে আসার সময় খাগড়াছড়ি বাস স্টেশন হয়ে আলুটিলায় যেতে পারবেন ৷

থাকবেন কোথায়ঃ

সাজেক ভ্যালিতে থাকার জন্য প্রায় শতাধিক রিসোর্ট ও কটেজ রয়েছে ৷ একেকটি রিসোর্ট ও কটেজ ভেদে এক রাতের জন্য রুম ভাড়া ১৫০০ টাকা থেকে ১৫০০০ টাকা পর্যন্ত ভাড়া লাগতে পারে ৷ তবে রুম ভাড়ার ক্ষেত্রে মাস খানেক আগেই বুকিং দিয়ে রাখা ভালো ৷ তা না হলে ভালো মানের রুম পাওয়ার নিশ্চয়তা খুবই কম ৷ আর যদি কম দামের রুম নিতে চান তাহলে আদিবাসী কটেজগুলোতে রুম নিতে পারেন ৷ এখানকার সব কটেজগুলোই মুটামুটি ভালো ৷ এই কটেজগুলোতে সুন্দর সুন্দর ভিউ পাওয়া যায় ৷

সাজেক ভ্যালির বেশ কিছু রিসোর্ট ও কটেজঃ

সাজেকে বেশ কিছু রিসোর্ট ও কটেজ রয়েছে ৷ তার মধ্যে কয়েকটি হলো –

  • রিসোর্ট রুংরাং ৷
  • সাজেক রিসোর্ট ৷
  • রুন্ময় রিসোর্ট ৷
  • মেঘপুঞ্জি রিসোর্ট ৷
  • ম্যাডভেঞ্চার রিসোর্ট ৷
  • মেঘ মাচাং ৷
  • জুমঘর ইকো রিসোর্ট ৷
  • লুসাই কটেজ ৷
  • আলো রিসোর্ট ৷
  • আদিবাসী ঘর ইত্যাদি ৷
সাজেক ভ্যালিতে যাবেন কিভাবে ? থাকবেন কোথায় !
সাজেক ভ্যালির বেশ কিছু রিসোর্ট ও কটেজ

খাবেন কোথায়ঃ

সাজেক ভ্যালির সবগুলো রিসোর্টেই খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে ৷ তাই আগে থেকেই রিসোর্টে বলে রাখলে তারা আপনার পছন্দমত রান্না করে দিবে ৷ সেক্ষেত্রে জনপ্রতি প্রত্যেকবেলায় খাওয়ার বিল আসবে ১০০ থেকে ২৫০ টাকা ৷ খাওয়ার মেন্যু হিসেবে পাবেন ভাত, মুরগীর মাংস, আলু ভর্তা ইত্যাদি ৷ অনেকেই বার বি কিউ করতে পছন্দ করেন ৷ তাই তারা চাইলে বার বি কিউও করতে পারবেন ৷

এছাড়াও আদিবাসী কটেজগুলোতেও খাওয়া – দাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে ৷ তাদেরকে আগে থেকে পছন্দমত খাবারের কথা বলে রাখলে তারা রান্না করে দিবে ৷

সাজেক ভ্রমণে জরুরি কিছু টিপসঃ

  • সাজেকে বিদ্যুতের কোন ব্যবস্থা নেই ৷ সোলারের ব্যবস্থা থাকলেও চার্জ হতে অনেক বেশি সময় লেগে যায় ৷ আর তা সহজে পাওয়াও যায় না ৷ তাই সাথে করে পাওয়ার ব্যাংক রাখতে পারেন ৷
  • আদিবাসীদের ছবি তুলতে হলে তাদের অনুমতি নিয়ে ছবি তুলতে হবে ৷ তাদের অনুমতি ছাড়া কখনোই ছবি তুলবেননা ৷
  • সাজেকে জিপি সিমে তেমন ভালো নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় না ৷ রবি, এয়ারটেল ও টেলিটকে নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় ৷ তাই ভালো নেটওয়ার্কের জন্য রবি, এয়ারটেল, বা টেলিটক সিম ব্যবহার করতে পারেন ৷
  • আদিবাসীরা অনেকটা সহজ-সরল প্রকৃতির হয় ৷ তাই তাদের সাথে ভদ্রভাবে ব্যবহার করবেন ৷ তাদের কৃষ্টি, তাদের কালচারের প্রতি সম্মান দেখাবেন
  • সাজেকে যাওয়ার পথে বেশ কিছু জায়গায় নিরাপত্তা বাহিনীদের ক্যাম্প রয়েছে ৷ সেখানে ভ্রমণকারীদের বেশ কিছু তথ্য জমা দিতে হয় নিরাপত্তার স্বার্থে ৷ তাই তাদেরকে তাদের কাজে সহযোগীতা করতে হবে ৷ সেই সাথে নিজের পরিচয় পত্রের কপিও সাথে রাখুন ৷
  • ছুটির দিনে রুম নিয়ে ঝামেলা এড়াতে মাস খানিক আগেই রুম বুকিং দিয়ে রাখুন ৷ তা না হলে রুম পেতে কষ্ট হয়ে যাবে ৷ অনেক সময় পাওয়াও যায় না ৷
  • দুই-তিন দিনের জন্য ভ্রমণে গেলে কখনো গাড়ি বসিয়ে রাখবেননা ৷ শুধু যাওয়ার জন্য গাড়ি ঠিক করুন ৷ আর ফিরে আসার সময় অন্য কোন গাড়িতে আসুন ৷ প্রয়োজনে দীঘিনালা থেকে গাড়ি নিয়ে ফেরত আসতে পারেন ৷
Avatar
Jannatun Naime
This is Jannatun Naime. I live in Dhaka, Bangladesh area. My hometown is Chandpur District. I am an Entrepreneur ,Teacher, Blogger and Media Activist. Also a freelancer. These are Graphics Design, Digital Marketing, Video Editing, Content Writing, Content Creator, SEO expert etc with 5 years of experience in the field. I always ‍like to read and write any subject. This website is my personal website. I am a woman who always loves to learn new things and spread it through writing. That’s why I started this blog. The main focus of my writing is to know and write about my country, my district, travel story, freelancing, information and communication technology, science, e-commerce, weaving and crafts, entrepreneurs story, our lifestyle, our cuisine etc. https://jannatunnaime.com
https://jannatunnaime.com/

Leave a Reply

Top

You cannot copy content of this page