You are here

গিরিকন্যা উপন্যাস সারসংক্ষেপঃ শাহমুব জুয়েল

গিরিকন্যা উপন্যাস
Spread the love

গিরিকন্যা উপন্যাস সারসংক্ষেপঃ শাহমুব জুয়েল

গিরিকন্যাঃ

গিরিকন্যা উপন্যাসের দু’টি প্রধান চরিত্র হলো অদ্রি ও পারিজাত ৷ এই উপন্যাসে রয়েছে বিল ভরাট, পাহাড় কাটা, পাখি নিধন, ছিন্নমূল মানুষের জীবনযাপন, ফসলের মাঠ বিরান, হাসপাতালে অক্সিজনের অভাবে মৃত্যু, সংস্কৃতি চর্চার অভাব, ঘুষবাণিজ্য, চোরাকারবারি, বিলবোর্ডের মাধ্যমে গাছ ও পরিবেশ ধ্বংস, অপচয় রোধসহ বিভিন্ন চিত্র ৷

গিরিকন্যার সারসংক্ষেপঃ

পৃথিবীতে মায়ার শক্তি অনেক বেশি ৷ যাকে জড়ায় তার সবকিছুতেই জড়ায় ৷ মনে হয় এই শক্তিতে কোন মধু আছে ৷ আর এই মধুমিতা-ই কি জীবন ! আমাদের চারপাশে যখন দুঃখের নদী বয়ে চলে , তখন ঘুম ভাংলেই মনে হয় মেঘলা আকাশ ৷ আর স্বপ্নরা তো মুড়ি দিয়ে রয়েছে ৷ কারন, এখানে মিথ্যের রাজ্যে তো কেউ আপন হয়না ৷ তাইতো সারাক্ষণ মন ভেজা থাকে ৷

মনে হচ্ছে সারা রাত্রি বৃষ্টি ঝরেছে ৷ দুঃখ আর সুখ মনে হচ্ছে এরা জমজ বোন ৷ এদের রং – রুপ অনেকটা গিরির মতো ৷ যেন দুটো এক ই সাথে জড়িয়ে আছে ৷ সুখ উঁকি মেরে চলে যায়, কোনভাবেই স্থির হয়ে ধরা দেয় না ৷ আর দুঃখ সে তো সময়ের বন্ধু , গায়ে জড়িয়ে থাকে , কোনভাবেই সরতে চায় না ৷ এটিই হয়তো গিরিকন্যার চিত্র !

ঠিক ই ধরেছেন ! এর ই ভিত্তিতে মানুষের জীবনযাপন সম্পর্কিত সাম্প্রতিক সময়ের একটি চিত্র তুলে ধরা হয়েছে এই উপন্যাসে ৷ উপন্যাসটির নাম – গিরিকন্যা ! লেখক আমার শ্রদ্ধেও শিক্ষক শাহমুব জুয়েল স্যার ৷ যখন ই জানতে পারি স্যার গল্প , উপন্যাস ইত্যাদি নিয়ে লেখালেখি করছেন তখন ই স্যারকে বলে গিরিকন্যা উপন্যাসটি নিজ সংগ্রহে নিয়ে আসি ৷ এই বইটিতে স্যার সমসাময়িক জীবনের নানান চিত্র তুলে ধরেছেন ৷ স্যার আমাদের তরুন প্রজন্মের মাঝে বইয়ের সংযোগ তৈরি করার জন্য লিখেছেন গল্প , কবিতা , উপন্যাস ৷

তার মধ্যে রয়েছে সবুজডানা, সমুদ্রগামিনী উপন্যাস ৷ সেই সাথে লিখেছেন প্রবন্ধ গ্রন্থ ‘কথাসাহিত্যে রাজনৈতিক দর্শন ও বিবিধ প্রবন্ধ’ ৷ এছাড়াও স্যারের সম্পাদিত লিটলম্যাগ বর্ণিল কবিতা গ্রন্থ: কাঁচা রোদের সন্ধানে (২০২৭), মুখোমুখি আহ্লাদি চিবুক (২০১৭), জলসিঁড়ি পেরিয়ে বালির সন্যাসে (২০১৯) ৷ আর গল্পগ্রন্থ হলো অথৈ সময়ের শ্বাস (২০১৮) ৷

আমার অনুভূতিঃ

গিরিকন্যার এই অংশটুকু পড়তে আমার বেশ ভালো লেগেছে ৷ তাই কিছু অংশ তুলে ধরলাম –

সন্ধ্যা নেমে এলো ৷ রিডিংরুমে লাইট জ্বলছে ৷ এক কাপ রং চা এবং দুটো টোস্টে হালকা নাশতা সেরে পারিজাত টেবিলে বসল ৷ গুমোট হাওয়া ৷ নীল আকাশে তারাদের ঝিলিমিলি ৷ খন্ডখন্ড মেঘ উড়ছে ৷ আজকাল ঋতুরা রুটিন হারাচ্ছে ! যখন তখন আকাশে মেঘ উঠে ৷ মাঝেমধ্যে বছরের সেরা ঝড়ের রুপ নেয় ৷ ঝড়ের আগে গুমোট হয় আবহাওয়া ৷ মুহূর্তে ঝড়ো হাওয়া শুরু হলে বীথি ভেতর থেকে চিৎকার দিয়ে বলল, ‘পারিজাত ঝড় আসছে ! তাড়াতাড়ি জানালা বন্ধ কর ৷’ ‘জি মা, বন্ধ করছি৷’ পারিজাত জানালা বন্ধ করতে করতে বাইরের বৈরী দৃশ্যকে দেখতে থাকে ৷ ঝড়ের সাথে অঝোরে বৃষ্টি পড়ছে ৷ দেখছিল বাইরের অবস্থা ৷

ততক্ষণে জল ঢুকে পড়ছে জানালার ফাঁক দিয়ে টেবিলের উপর ৷ ঝড়ের ডাক শুনলে বিদ্যুৎ বিরতি দেয় ৷ এটা সাধারণ নিয়ম হয়ে গেছে ৷ বিদ্যুৎ চলে গেল ৷ চারিদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার ৷ মা মেয়ে দুজনেই আলো খুঁজতে গিয়ে ধাক্কা লাগল ৷ পারিজাত খটখট করে হেসে ওঠে ৷ বীথি বিরক্ত হয়ে মেয়েকে বলল, ‘মোবাইল কি করলে ?’ সন্ধার পর থেকে পারিজাত মোবাইল ধরেনি ৷ ‘মা, মোবাইল দুটোই শেলফের উপরে রেখেছি ৷’

মাজেদা ছিল সাহসী মেয়ে ৷ বজ্রপাতে তেমন ভয় পেত না ৷ সে মা মেয়েকে অভয় দিয়ে কাজে সহযোগিতা করত ৷ অন্ধকারেও মেয়েটা চুপিচুপি হাঁটতে পারে ৷ আন্দাজ করে নিয়ে আসতে পারত প্রয়োজনীয় জিনি ৷ সে যাওয়ার পর কিছু বিষয়ে মা-মেয়ে খুব বিপদে পড়েছে ৷ মানুষের ধর্ম হলো যখন বিপদে পড়ে তখন অন্যকে স্মরণ করতে থাকে ৷ দুজনে দাঁড়িয়ে আছে, ঝড়ের মধ্যে বিদ্যুতের আলো জানালা ভেদ করে ঢুকল ৷ নজর গেল শেলফের দিকে ৷ পারিজাত এগিয়ে গিয়ে মোবাইল নিয়ে এলো ৷ বীথি মেয়ের সাহসের প্রশংসা করে বলল, ‘সঙ্গদোষে তোমার ভালো উন্নতি হয়েছে ৷’

পাঠের বইগুলো খুঁটিয়ে দেখে ৷ বই হলো প্রিয় বন্ধু ৷ নিসর্গপ্রীতি সবার থাকে না; যাতে আত্নানুভূতি জেগে ওঠে ৷ বীথি দুশ্চিন্তায় পড়ে গেল ৷ কোথাও বের হওয়ার কথা বললেই প্রাকৃতিক দূর্যোগ শুরু হয় ৷ এটা ভাবনার মতোই ৷ পারিজাত মায়ের দিকে তাকালে বীথি মেয়েকে শাসাল ৷ মেয়ে বড় হয়েছে ৷ মায়ের সব কিছুই সে বুঝে ৷ কখন রেগে যায় এবং স্বাভাবিক থাকে সবই জানা হয়ে গেছে ৷

পারিজাত মায়ের দিকে তাকিয়ে বলল, ‘মা, দূর্যোগ তো বেশিক্ষন থাকে না ৷ পথে বেরোলে দূর্যোগ কেটে যায় ৷’ ‘তা অবশ্য খারাপ বলিসনি ৷ বহুবার তো এমনটাই ঘটেছে ৷ বৃষ্টি সমস্যা না; বৃষ্টির সাথে বাজ পড়ে ৷ গত কয়েক বছর বাজ পড়ে অনেক লোকের প্রাণহানি হয়েছে৷’ পারিজাত বলল, ‘এ থেকেই বোঝা যায়, প্রাকৃতিক ভারসাম্য হারাচ্ছে আমাদের দেশ ৷ শুধু আমাদেরই না, পৃথিবীই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মধ্যে রয়েছে ৷ কখন কি শুরু হয় বোঝা মুশকিল৷’ বীথি মেয়ের ভাবগম্ভীর কথায় সায় দিয়ে বলল, ‘হ্যা, ঠিক বলেছিস৷’

Avatar
Jannatun Naime
This is Jannatun Naime. I live in Dhaka, Bangladesh area. My hometown is Chandpur District. I am an Entrepreneur ,Teacher, Blogger and Media Activist. Also a freelancer. These are Graphics Design, Digital Marketing, Video Editing, Content Writing, Content Creator, SEO expert etc with 5 years of experience in the field. I always ‍like to read and write any subject. This website is my personal website. I am a woman who always loves to learn new things and spread it through writing. That’s why I started this blog. The main focus of my writing is to know and write about my country, my district, travel story, freelancing, information and communication technology, science, e-commerce, weaving and crafts, entrepreneurs story, our lifestyle, our cuisine etc. https://jannatunnaime.com
https://jannatunnaime.com/

One thought on “গিরিকন্যা উপন্যাস সারসংক্ষেপঃ শাহমুব জুয়েল

  1. পৃথিবীতে মায়ার শক্তি অনেক বেশি ৷ যাকে জড়ায় তার সবকিছুতেই জড়ায় ৷ মনে হয় এই শক্তিতে কোন মধু আছে ৷ আর এই মধুমিতা-ই কি জীবন ! আমাদের চারপাশে যখন দুঃখের নদী বয়ে চলে , তখন ঘুম ভাংলেই মনে হয় মেঘলা আকাশ ৷ আর স্বপ্নরা তো মুড়ি দিয়ে রয়েছে ৷ কারন, এখানে মিথ্যের রাজ্যে তো কেউ আপন হয়না ৷ তাইতো সারাক্ষণ মন ভেজা থাকে ৷ মনে হচ্ছে সারা রাত্রি বৃষ্টি ঝরেছে ৷ দুঃখ আর সুখ মনে হচ্ছে এরা জমজ বোন ৷ এদের রং – রুপ অনেকটা গিরির মতো ৷ যেন দুটো এক ই সাথে জড়িয়ে আছে ৷ সুখ উঁকি মেরে চলে যায়, কোনভাবেই স্থির হয়ে ধরা দেয় না ৷ আর দুঃখ সে তো সময়ের বন্ধু , গায়ে জড়িয়ে থাকে , কোনভাবেই সরতে চায় না ৷ এটিই হয়তো গিরিকন্যার চিত্র !

Leave a Reply

Top

You cannot copy content of this page