তরুন উদ্যোক্তা মোঃ আসাদুজ্জামান ! উদ্যোক্তাদের গল্প তরুন উদ্যোক্তার গল্প by Jannatun Naime - October 5, 2021October 5, 20210 Spread the love তরুন উদ্যোক্তা মোঃ আসাদুজ্জামান ! একজন তরুন উদ্যোক্তা মোঃ আসাদুজ্জামান ! যার জন্ম ও বেড়ে উঠা বাংলাদেশের দক্ষিণ অঞ্চল সুন্দরবনের কোলঘেষা সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ থানায় । কর্মসূত্রে তিনি বর্তমানে মালেশিয়ায় রয়েছেন । তারপরও প্রবাস জীবনে থাকাকালীন তিনি শুরু করেছেন তার উদ্যোক্তা জীবন । এই পর্বে আমরা তার কাছ থেকে জানবো তার উদ্যোক্তা জীবনের জার্নিটা । তিনি কিভাবে প্রবাসে থেকেও স্বদেশে শুরু করেছেন তার উদ্যোগ ! তরুন উদ্যোক্তা মোঃ আসাদুজ্জামানঃ আমি মোঃ আসাদুজ্জামান ! আমার বাড়ি বাংলাদেশের দক্ষিণ অঞ্চল সুন্দরবনের কোলঘেষা সাতক্ষীরা জেলার কালিগজ্ঞ থানার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নে । আমরা ৪ ভাই বোনের মধ্যে আমিই সবার ছোট এবং খুব আদরের । বর্তমানে আমি কর্মসূত্রে মালেশিয়ায় রয়েছি। আমার স্কুল জীবনঃ ২০০৪ সালে আমাদের গ্রামের একটি সরকারি প্রাইমারী স্কুলে আমার পড়া-লেখার যাত্রা শুরু হয় । প্রাইমারী শেষ করে গ্রামের একটি হাই স্কুলে ভর্তি হই । সেখানে টানা ৫ বছর পড়ালেখা শেষ করে আবারো গ্রামের একটি কলেজে ভর্তি হই । যেহেতু আমি গ্রামের ছেলে তাই শহরে রেখে পড়াশুনা করানোর মত অবস্থান ছিলোনা আমার বাবার । তাছাড়া তখন আমার পরিবারের তেমন সামর্থও ছিলোনা যে, আমাকে শহরে রেখে ভালো কোন কলেজে পড়ালেখা করাবে । যাইহোক, কলেজে ২ বছর পড়ালেখা করে সেখান থেকে HSC পরিক্ষা দিয়ে পাশ করি । উদ্যোক্তা মোঃ আসাদুজ্জামান ! আমার কর্মজীবনঃ আমি যখন ১০ম শ্রেণিতে পড়ি তখন আমার জীবনে প্রথম কোন প্রতিষ্ঠানে চাকরি করি । আমি কর্মজীবনে প্রথমে পপুলার লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানিতে (জীবন বীমা) ২ বছর ফিল্ডে কাজ করি । পপুলার লাইফে চাকরি করার মূল উদ্দেশ্য ছিলো মাঠ পর্যায়ে কাজ করে সেই কাজ সম্পর্কে সঠিক ধারণা অর্জন করা । আমি সেখানে টানা ২ বছর কাজ করি । ২ বছর সেখানে কাজ করার পর সেখান থেকে বিদায় নিলাম । তারপরে কিছুদিন পর একটা এনজিওতে ইউনিয়ন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরে প্রায় ১ বছর কাজ করেছি । ওখানে আমাকে কোন নির্ধারিত বেতন দেওয়া হতো না । কিন্তু আমি আমার নেটওয়ার্ক তৈরি করার জন্য ইউনিয়নে ঘুরে ঘুরে মানুষের জন্য কাজ করতাম । তাছাড়া সবথেকে বড় বিষয় এনজিওতে কাজ করে গ্রামের আসহায় মানুষদের বিভিন্ন হেল্প করার সুযোগ পেয়েছিলাম । তারপর HSC পাশ করে চলে এলাম ঢাকা শহরে । সেখানে গিয়ে একটা মেকানিক্যাল ট্রেইনিং সেন্টারে ভর্তি হলাম । ৭ দিন ট্রেইনিং নিয়ে একটা ফ্যাক্টরিতে মেকানিক্স হিসাবে যুক্ত হলাম । আমি যেহেতু ট্রেইনিং সেন্টার থেকে কাজ শিখেছি তাই বেতন খুব কম ছিল । বেতন ছিল মাত্র ৬ হাজার টাকা । কিছুদিন কাজ করার পর ভাবতে থাকলাম আমাকে নিজে কিছু করতে হবে । আর সেই ভাবনা অনুযায়ী বাড়ি ফিরে উদ্যোগ নিলাম ফার্মেসী করার । প্রথমে আমার বাসা থেকে ফার্মেসী করার জন্য রাজী হচ্ছিলোনা । কিন্তু আমিও নাছড়বান্দা । তাই হাল ছাড়িনি । সবাইকে বুঝিয়ে একটা দোকান এডভান্স করলাম । কিন্তু প্রস্তুটি শেষ করার আগে মালেশিয়ায় আসার জন্য বাড়িতে অফার চলে গেলো । তখন বাড়ি থেকে সবাই বলতে শুরু করলো, আগে মালেশিয়ায় গিয়ে কয়টা বছর থেকে যেতে । তারপর যে টাকা জমাবো তা দিয়ে পরবর্তীতে বিজনেস শুরু করতে । আর সেই ভেবেই চলে আসলাম স্বপ্নের দেশ মালেশিয়াতে । তারপরও আমার সেই স্বপ্নকে আমি একদিন বাস্তবে রুপ দিবো । এটাই আমার ভাবনা । বর্তমানে সেই স্বপ্ন পুরণ করতে আমার সামনের পথটা এখন অনেকটা সহজ হয়ে গেছে । মশলা ! আমার উদ্যোক্তা জীবনঃ গত ৬ জুন ২০২০ সালে আমার উদ্যোক্তা জীবন শুরু হয় । আমি মুলতঃ প্রবাসে থেকেই আমার উদ্যোগ শুরু করেছি । আমরা ৩ জন বন্ধু মিলে আমাদের এই উদ্যোগ শুরু করেছি । আমাদের উদ্যোগের নাম স্বাদ ও মান ডট কম । এটি একটি এফ কমার্স বিজনেস । আমরা মুলতঃ কাজ করছি মসলা আইটেম নিয়ে । ইতিমধ্যে আমাদের প্রতিষ্ঠানের পণ্য বাংলাদেশের ৬৪ জেলাতে পৌছাতে স্বক্ষম হয়েছি । আমরা চাই আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠান একদিন একটা ব্যান্ডে প্রতিষ্ঠিত হবে । উদ্যোক্তা জীবনে কেন আসাঃ আমি যেহেতু ছোট বেলা থেকে আমার আব্বুর ব্যাবসা দেখে আসছি । তাই তখন থেকেই আমার স্বপ্নটা ছিল আমি একজন উদ্যোক্তা বা ব্যবসায়ী হবো । আর সেই চিন্তা থেকে মুলতঃ উদ্যোক্তা হওয়া । আমি চাই আমার নিজের কাজের মাধ্যমে নিজেকে সবার সামনে পরিচয় করাতে । নিজেকে নিজের মতো করে গড়ে তুলতে । ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাঃ আমার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা আমি নিজে এমন কিছু করতে চায় যার মাধ্যমে আমি সাবলম্বী হতে পারি এবং আরো ১০ জনের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিতে পারি ।সর্বপোরি একজন সফল উদ্যোক্তা হতে পারি। লেখকঃ উদ্যোক্তা মোঃ আসাদুজ্জামান উদ্যোগঃ স্বাদ ও মান ডট কম