শরতের কাশফুলের শুভ্রতায় সেজেছে হাজীগঞ্জ ! সংবাদ by Jannatun Naime - October 7, 2021January 30, 20220 Spread the love শরতের কাশফুলের শুভ্রতায় সেজেছে হাজীগঞ্জ ! প্রকৃতিতে যখন শরতের আগমন ঘটে তখন কাশফুল ই জানান দেয় এর আগমনী বার্তা ৷ আর বর্ষা ঋতুকে জানিয়ে দেয় বিদায়ী বার্তা ৷ তাই তো শরতের আগমনে কাশফুলের শুভ্রতায় সেজে উঠেছে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ৷ ষড়ঋতুর দেশ এই আমার বাংলাদেশ ৷ এখানে ঋতুর পালাবদলে বাংলার প্রকৃতি সেজে উঠে ভিন্ন ভিন্ন সাজে ৷ কখনো গ্রীস্মের দাবদাহ আবার কখনো বর্ষার ঝিরিঝিরি বৃষ্টি ৷ তারপর যে ঋতুর আগমন ঘটে তা হলো শুভ্র-শ্যামল শরৎ ৷ এ যেন প্রকৃতির ই এক অপূর্ব খেলা ৷ শরৎ মানে নিল আকাশের সাদা মেঘের ভেলা ৷ শরৎ মানে শিউলি ফুলের গন্ধে মন উদাস হওয়া ৷ শরৎ মানে গাছে গাছে হাসনাহেনা আর শাপলা ফুলের সমারোহ ৷ শরৎ মানে গ্রাম-বাংলার গাছে পাকা তাল ৷ আর সেই তাল দিয়ে তৈরি করা পিঠা আর পায়েসের ধুম ৷ তাইতো শরৎকে বলা হয় শুভ্রতা আর স্নিগ্ধতার প্রতীক ৷ কিন্তু ঋতুর পালাবদলে সময়ের সাথে সাথে গ্রামে-গঞ্জে কাশফুলের আধিক্য হারিয়ে গেলেও হাজীগঞ্জে এর আধিক্য অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে ৷ তাইতো চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলায় নব নির্মিত হাজীগঞ্জ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটটি সেজেছে ফুলের সমারোহে ৷ যত দূর চোখ যায় শুধু কাশফুল আর কাশফুল ৷ প্রকৃতির পূবাল হাওয়ায় যেন দুলতে থাকে সেই ঘন শুভ্র কাশফুল ৷ পলিটেনিক ইনস্টিটিউটের প্রায় চারপাশ জুড়েই রয়েছে বিস্তীর্ন কাশবন ৷ যদিও এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম এখনো শুরু হয়নি ৷ তবে এর চার পাশে গড়ে উঠা কাশবন আর ইনস্টিটিউটের সৌন্দর্য মুগ্ধ করেছে প্রকৃতি প্রেমীদের এবং ছাত্র-ছাত্রীদের ৷ প্রায়সই দেখা যায় এই ক্যাম্পাসে অন্য ইনস্টিটিউটের ছাত্র-ছাত্রীদের আনাগোনা ৷ এখানে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি নানা শ্রেণি পেশার মানুষ জনও আসেন কাশফুলের শুভ্রতায় মুগ্ধ হতে ৷ সেই সাথে ক্যাম্পাস প্রাঙ্গনের মনোরম দৃশ্য উপভোগ করতে চলে আসেন দর্শনার্থীরা ৷ এটি কেবল একটি ইনস্টিটিউট ই না, মুগ্ধতার এক অনন্য নিদর্শন ৷ যেখানে পড়াশুনার পাশাপাশি মুগ্ধ হওয়া যায় প্রকৃতিতে ৷ সেই সাথে কাশফুলের শুভ্রতায়ও স্নিগ্ধ হওয়ায় এক লহমায় ৷ তারপর ঋতুর পালাবদলে শরৎ শেষে আগমন ঘটে হেমন্তের ৷ তাই গ্রামের বধূরা পরবর্তীতে এই কাশ দিয়ে তৈরি করেন ঝাঁটা, ঝুড়িসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ৷ সেই সাথে কৃষকের ঘরের ছাউনি হিসেবেও ব্যবহৃত হয় এই কাশফুল ৷ এই সময়ে চাঁদপুরের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রকৃতি প্রেমীরা ছুটে আসেন হাজীগঞ্জ পলিটেকনিক ইনিস্টিটিউট প্রাঙ্গনে ৷ বিশেষ করে আশে পাশের স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের বিচরনে মুখরিত হয় এই প্রাঙ্গন ৷ প্রতিমুহুর্তেই চোখ বুজলেই মনে হয় শরতের মুগ্ধতায় ভেসে বেড়াচ্ছে সবাই ৷ আর সাদা কাশফুলগুলো উড়ে বেড়াচ্ছে বাতাসে ৷ আকাশে আকাশে ভেসে বেড়াচ্ছে সাদা মেঘের ভেলা ৷ শরৎকালের এই রোদ-মেঘের খেলায় কাশবনের ফুলগুলো যেন দোল খেলতে থাকে নদীর ঢেউয়ের মত ৷ তখন মনে হয় শরৎ ও কাশফুল যেন একই সুতোই গাঁথা ৷ যুগের পর যুগ গ্রামের মেঠো পথ, খাল-বিল, নদ-নদী, ঝোপ-ঝাড়সহ বিভিন্ন ফাঁকা জায়গায় দেখা যেত এই কাশফুল ৷ তাইতো রাস্তা দিয়ে যাওয়ার পথে প্রতিটি মানুষ মুগ্ধ হতো কাশফুলের সৌন্দর্য দেখে ৷ যদিও এখন অনেকটা বিলুপ্তির পথে ৷ তবুও শরৎ এলে এর আধিপত্য দেখা যায় এখন সবখানেই ৷ কাশফুল হলো এক ধরনের ঘাস জাতীয় উদ্ভিদ ৷ এদের উচ্চতা হয় তিন মিটার লম্বা ৷ আর এদের রঙ হয় ধবধবে সাদা ৷ কাশফুল মূলতঃ এক ধরনের ছন গোত্রীয় ঘাস ৷ এইগুলো বেশির ভাগ ই জন্মায় নদীর ধারে ৷ যদিও বিভিন্ন মাঠে-ঘাটে, রাস্তার পাশেও এদের দেখা যায় ৷ তবুও এদের মুল জন্মস্থান হলো নদীর চারিপাশ ৷