হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদ ! চাঁদপুর জেলা চাঁদপুরের ঐতিহ্য by Jannatun Naime - October 18, 2021January 30, 20220 Spread the love হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদ ! হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদ ! আমাদের চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলার প্রাণ কেন্দ্রে অবস্থিত এই হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদ ৷ সুউচ্চ মিনার আর বিশাল আয়তন নিয়ে গুরুত্বপূর্ন ইসলামের কেন্দ্র হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে শতাব্দীর প্রাচীন এই মসজিদ ৷ হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদের আয়তনঃ হাজীগঞ্জ বড় মসজিদটি হাজীগঞ্জ উপজেলার হাজীগঞ্জ বাজারের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক মসজিদ ৷ এর আয়তন ২৮ হাজার ৪০৫ বর্গফুট ৷ এই মসজিদটি দুই তলা বিশিষ্ট একটি মসজিদ ৷ মসজিদে রয়েছে ১টি ১২১ ফুট লম্বা মিনার ও দু’টো গম্বুজ ৷ মসজিদটির পাশে রয়েছে হাফেজিয়া মাদ্রাসা, আলিয়া মাদ্রাসা, ফোরকানিয়া মাদ্রাসা ও ইসলামিয়া পাঠাগার ৷ এই সবগুলো মাদ্রাসার মধ্যে আলীয়া মাদ্রাসা ব্যতীত বাকি মাদ্রাসাগুলো মসজিদ কমিটির তত্ত্বাবধায়নে চলে বলে জানা গেছে ৷ বৃহত্তর কুমিল্লা অঞ্চল তো বটেই, দেশের সর্ববৃহৎ মসজিদগুলোর মধ্যে একটি এই মসজিদটির স্থাপত্যশৈলী ৷ এর অলংকরণ সত্যিই চমৎকার ও দৃষ্টিনন্দন ৷ মসজিদটির নির্মাণ কাজঃ ঐতিহাসিক হাজীগঞ্জ বড় মসজিদটি নির্মিত হয়েছে প্রায় ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দে ৷ এই মসজিদটিকেই চাঁদপুর জেলার সবচেয়ে প্রাচীন বা পুরাতন মসজিদ হিসেবে ধরা হয় ৷ মসজিদটি নির্মাণ করেন হাজী আহমাদ আলী পাটওয়ারী ৷ মসজিদটি নির্মাণ করার সময় হাজীগঞ্জ বা তার আশেপাশের কোন এলাকাতে কোনো ইট ভাটা ছিলনা ৷ সেই সময় মসজিদটির উদ্যোক্তা সেখানে একটি ইট ভাটা তৈরি করেন ৷ হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদ ! তারপর সেই ইট ভাটা থেকে ইট তৈরি করে সেই ইট দিয়েই নির্মাণ করা হয় হাজীগঞ্জ বড় মসজিদ ৷ এছাড়াও মসজিদ নির্মাণের জন্য তিনি জাহাজ ভাড়া করে ভারতের কলকাতা থেকে মর্মর পাথর ও লোহার বীম কিনে আনেন ৷ তারপর ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দে মসজিদটির নির্মাণ কাজ শেষ হয় এবং শুক্রবারের দিন মসজিদে আজান দেওয়ার মাধ্যমে মসজিদটি উদ্বোধন করা হয় ৷ এই মসজিদটি হাজীগঞ্জ মৌজার অন্তর্ভূক্ত ৷ হাজীগঞ্জ বড় মসজিদের ইতিহাসঃ ঐতিহাসিক তথ্য মতে, আরব থেকে ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে আগত বুজুর্গ মকীম উদ্দীন ( রঃ ) এর বংশধর হাজী মনীর উদ্দীনের নামানুসারে হাজীগঞ্জ নামকরণ করা হয় ৷ এই বংশের ই হাজী আহমাদ আলী পাটওয়ারী ১৩৩৭ বঙ্গাব্দে পাকা মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করেন ৷ মসজিদটির কাজ সমাপ্তীর পর ১৩৪৪ বঙ্গাব্দের ১০ ই অগ্রহায়ণ প্রথম জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হয় ৷ সেই জুমার দিন উপস্থিত ছিলেন অবিভক্ত বাংলার তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী এ.কে ফজলুল হক, হোসেন সহিদ সোহরাওয়ার্দী, নওয়াব মোশারফ হোসেন ও নওয়াব জাদা খাজা নসরুল্লাহ ৷ ঐ নামাজে ইমামতি করেন মাওঃ আবুল ফারাহ জৈনপুরী ৷ মসজিদটির মুল ভবনের পাশে রয়েছে এক সাথে অসংখ্য মুসল্লীর অজু আদায়ের জন্য বিশাল অজুখানা ৷ আর নারীদের জন্য রয়েছে এখানে পৃথক অজুখানা ও নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা ৷ প্রায় দুই একর জায়গার উপর প্রতিষ্ঠিত মসজিদের নিচ তলায় ও দোতলায় এবং বাহিরের উন্মুক্ত প্রাঙ্গন মিলিয়ে মোট ২০ হাজার মুসল্লী একসাথে জুমার নামাজ আদায় করতে পারেন ৷ মসজিদের অবস্থানঃ হাজীগঞ্জ বড় মসজিদটি হাজীগঞ্জের মধ্য বাজারে অবস্থিত ৷ এর পশ্চিমে রয়েছে চাঁদপুরের সড়ক আর পূর্বে রয়েছে কুমিল্লা সড়ক ৷ উত্তরে রয়েছে মসজিদটি আর দক্ষিণে মার্কেট ৷ যাবেন যেভাবেঃ আপনি যদি চাঁদপুর সড়ক কিংবা রামগঞ্জ সড়ক হয়ে হাজীগঞ্জ বিশ্বরোড দিয়ে যেতে চান তাহলে বিশ্বরোডে এসে কুমিল্লার দিকে যাওয়া রাস্তা হয়ে আরেকটু সামনে গেলেই দেখতে পাবেন মসজিদটি ৷ আর কুমিল্লা সড়ক হয়ে আসলে হাজীগঞ্জ ব্রিজ পার হয়ে বিশ্ব রোডে যাওয়া রাস্তা দিয়ে একটু সামনে গেলেই দেখতে পাবেন মসজিদ ৷ এই মসজিদটি চাঁদপুর জেলার ঐতিহাসিক প্রাচীন জাতীয় মসজিদ ৷ এটি এখন সব জায়গায় বেশ পরিচিত একটি মসজিদ ৷